শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৫, ১০:১৩ পিএম

২৬ বার পরীক্ষায় ফেল করেও করুণ বললেন, ‘আবার বসব’

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৫, ১০:১৩ পিএম

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সুকুমার রায়ের ‘সৎপাত্র’-এর গঙ্গারামকে মনে পড়ে? সেই যে, ১৯ বার ফেল করে অবশেষে জীবনের কাছে হাল ছেড়ে দিয়েছিল! কিন্তু বাস্তবের গঙ্গারাম যেন জন্মেছিলেন তালোধ গ্রামে। নাম তার করুণ নীল দেশাই। বয়স ৫২, পেছনে পড়ে আছে পরিশ্রমে গাঁথা এক জীবনের উপাখ্যান, যা শুনলে ব্যর্থতা শব্দটা নিজেই লজ্জায় মুখ লুকোবে।

১৯৮৯ সালে ম্যাট্রিক পাস করেছিলেন নীল। স্বপ্ন ছিল প্রকৌশলী হওয়ার, তাই এগিয়ে যান বিজ্ঞান নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে। সে যাত্রায় ব্যর্থ হন তিনি। কিন্তু ১৯৯১ সালের সেই প্রথম হোঁচটেই ভেঙে যায় না তার আশা। একবার, দুইবার… এভাবে টানা ২৬ বার বসেছেন দ্বাদশ শ্রেণির (এইচএসসি) পরীক্ষায়। প্রতিবারই ফলাফল সেই পুরোনো চেনা—অকৃতকার্য।

কিন্তু নীল থেমে যাননি। না রাজনীতির চাতাল, না জনপ্রিয়তার ঝাণ্ডা—সব ছাপিয়ে তিনি লড়েছেন এক নীরব, কঠিন সংগ্রাম। ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করে খুলেছেন একটি ছোট দোকান। বিদ্যুতের তারের ভাঁজে ভাঁজে বাঁধা ছিল তার স্বপ্ন, আর প্রতিবার পরাজয়ের মধ্যেও ছিল এক অদম্য ধৈর্য।

অবশেষে, যে পরীক্ষায় কেউ নম্বর গোনে না, মানুষের মন জয়ের সেই পরীক্ষায় জয়ী হলেন নীল। কোনো রাজনৈতিক দলের ছায়া ছাড়া তিনি পেলেন গুজরাটের তালোধ গ্রামের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৮০ শতাংশেরও বেশি ভোট। গ্রামের মানুষ তাকে পাস করালেন শুধু ভোটে নয়, বিশ্বাসেও।

২০০৫ সালে গুজরাটের শিক্ষা নীতিতে বড় একটা পরিবর্তন আনে রাজ্য সরকার। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ডিপ্লোমা শেষ করেও কেউ চাইলে ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। সেই সুযোগই কাজে লাগান করুণ নীল দেশাই। ভর্তি হন ভিএস প্যাটেল কলেজে। রসায়ন নিয়ে স্নাতক শেষ করে এরপর স্নাতকোত্তরও পাশ করেন তিনি। থেমে যাননি এখানেই, ২০১৮ সালে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রিও অর্জন করেন।

শুধু পড়াশোনা নয়, সমাজসেবায়ও সমানভাবে সক্রিয় নীল। গত তিন দশক ধরে নানা সামাজিক কাজে যুক্ত তিনি। গুজরাট জুড়ে লাগিয়েছেন শত শত গাছ, গড়ে তুলেছেন একটি পরিবেশবাদী সংগঠন ‘হরিয়ালি গ্রুপ’। এই গ্রুপ তৈরি করেছে সাতটি কৃত্রিম অরণ্য, যেগুলো মিয়াওয়াকি পদ্ধতিতে তৈরি।

ভাংগাম জেলায় তিনি সংস্কার করেছেন একটি ১৫০ বছরের পুরোনো কুয়ো, আর এমন আরও ২০টি কুয়ো পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা আছে তার।

আর এখন? এখন তিনি নিজেকে ঘিরেও আবার স্বপ্ন দেখছেন। বলেন, গ্রামের মানুষ তার ওপর যে বিশ্বাস রেখেছেন, সেই আস্থা বজায় রাখার চেষ্টা করবেন। আর তাই জীবনের অসমাপ্ত অধ্যায়টিকে শেষ করতে এবার ২৭তম বারের মতো দ্বাদশ শ্রেণির (এইচএসসি) পরীক্ষায় বসবেন করুণ নীল দেশাই।

Shera Lather
Link copied!