পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) যদি রাজ্যে চালু না হয়, তবে পশ্চিমবঙ্গ ধীরে ধীরে ‘পশ্চিম বাংলাদেশে’ পরিণত হতে পারে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সংবাদ সংস্থা এএআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, রাজ্যের বর্তমান জনতাত্ত্বিক পরিবর্তন ও আইনশৃঙ্খলার অবস্থা উদ্বেগজনক। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘যদি রাজ্য উন্নতির পথে থাকে, তবে এত মানুষ কেন পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন? দেশের মোট জাল নোটের ৭২ শতাংশ রাজ্য থেকে আসছে, মালদা অন্যতম উৎস। রাজ্য সরকার কী করছে?’
তিনি বলেন, ‘এসআইআর পশ্চিমবঙ্গেও হবে। না হলে রাজ্য ধীরে ধীরে পশ্চিম বাংলাদেশে পরিণত হবে। রাজ্যে মধ্যযুগীয় পরিস্থিতির মতো চিত্র দেখা যাচ্ছে।’
এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই বিহারে এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদ চলছে। ইন্ডিয়া জোট অভিযোগ করছে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনের শুরু থেকে টানা পাঁচ দিন ধরে ইস্যুটি নিয়ে উত্তাল আলোচনা চলছে।
শুক্রবার রাজ্যসভায় কংগ্রেস সাংসদ রেণুকা চৌধুরী ২৬৭ নম্বর বিধি অনুযায়ী আলোচনার জন্য ‘সাসপেনশন অব বিজনেস’ নোটিস দেন। কংগ্রেসের আরও কয়েকজন নেতা একই দাবি জানান। সংসদ ভবনের প্রাঙ্গণে ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা বিক্ষোভে অংশ নেন। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীসহ জোটের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাদের হাতে থাকা পোস্টারে লেখা ছিল ‘এসআইআর গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ’।
বিজেপির পক্ষ থেকে পাল্টা সুরে বলা হয়েছে, এসআইআর-এর মূল উদ্দেশ্য অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের সনাক্ত করা এবং সঠিক ভোটার তালিকা তৈরি। তাদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে এই প্রক্রিয়া না হলে ভবিষ্যতে বড় সংকট তৈরি হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা ও ভবিষ্যতের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি রাজ্যে এসআইআর কার্যক্রম বাস্তবায়নে জোর দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে এই ইস্যু আগামী দিনে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে বড় বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠতে পারে।