ঢাকা রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

ফিজিওথেরাপি কর্মীদের রাজত্ব

বিল্লাল হোসেন, যশোর
প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ০২:১০ এএম

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে অবৈধ ১৩ ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্মীদের রাজত্ব চলছে। তারা হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড এবং পেইং ওয়ার্ড দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সেখানে এককভাবে বাণিজ্য করতে একাধিক ফিজিওথেরাপি সেন্টারে কর্মীরা পেশিশক্তি প্রয়োগ করছে।

রোগীদের থেরাপি দেওয়ার জন্য ওয়ার্ড ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্মীরা হাসপাতালের মধ্যে মারামারিতে লিপ্ত হচ্ছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলছেন, ফিজিওথেরাপি কর্মীদের  প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তারা মানছে না।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার মেঘনা ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্মচারী চামেলি পাখি জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে থেরাপির কাজে গেলে শাহজালার ফিজিওথেরাপি সেন্টারের মালিক বাচ্চুসহ তার প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মচারী তাকে মারধর করে। এতে চামেলি গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় মেঘনা ফিজিওথেরাপি সেন্টারের মালিক গোলাম রসুল কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগটি পুলিশ তদন্ত করছেন। 

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মেঘনা ও শাহাজালাল ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্তৃপক্ষ জেনারেল হাসপাতালের ওয়ার্ড এককভাবে দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এরই জেরে গত বৃহস্পতিবার পুরুষ পেইং ওয়ার্ডে দুই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে গোলযোগের সৃষ্টি হয়। একটি পক্ষ টাকার ভাগ নিয়ে ফিজিওথেরাপি কর্মীদের অবৈধভাবে প্রবেশ করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। যে কারণে তারা ওয়ার্ড দখলে ব্যস্ত রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেনারেল হাসপাতালকে ঘিরে ১৩টি অবৈধ ফিজিওথেরাপি সেন্টার গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে সেবা ফিজিওথেরাপি সেন্টার, শাহজালাল ফিজিওথেরাপি সেন্টার, সোনালী ফিজিওথেরাপি সেন্টার, নাজনীন ফিজিওথেরাপি সেন্টার, মেঘনা ফিজিওথেরাপি সেন্টার উল্লেখযোগ্য। এসব প্রতিষ্ঠানের ৪-৫ কর্মী নিয়ে অবৈধভাবে হাসপাতালে প্রবেশ করে ভর্তি রোগীদের থেরাপি দিয়ে আসছেন। বর্তমানে ফিজিওথেরাপি দেওয়ার নামে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে মোটা অঙ্কের টাকাও হাতিয়ে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফিজিওথেরাপি কর্মীদের হাসপাতালে প্রবেশ না করতে নিষেধ করলেও তারা মানছেন না। একটি পক্ষকে ম্যানেজ করে তারা হাসপাতালে অবাধে যাতায়াত করছেন। অযোগ্য ও কম যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মীদের দিয়ে রোগীদের ফিজিওথেরাপি দেওয়ার ফলে রোগীরা উপকারের পরিবর্তে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

শোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, ফিজিওথেরাপি কর্মীরা অবৈধভাবে হাসপাতালে প্রবেশ করে। তারা চিকিৎসকের নির্দেশনা ছাড়াও ইচ্ছামতো রোগীদের থেরাপি দিচ্ছে বলে শুনেছেন। বিগত দিনে তাদের হাসপাতালে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও তারা গোপনে প্রবেশ করছে। ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্মীদের হাসপাতালে অবৈধভাবে প্রবেশের ব্যাপারে নতুন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।