নারী বিশ্বকাপ কাবাডির খেলা স্থগিত হয়ে গেছে তিন দিন আগে। কিন্তু তা জানেই না বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন। হায়দরাবাদে ৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল মেয়েদের বিশ্বকাপ কাবাডি। অথচ আজ রীতিমতো বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ।
যাওয়ার দিনক্ষণও বলে দেন ১ আগস্ট। পরে মুঠোফোনে কাল বিকেলে জিজ্ঞেস করা হলে সোহাগ বলেন, ‘আমাদের কাছে আজকে (গতকাল) বেলা তিনটা ১০ মিনিটে বিশ্বকাপ স্থগিতের মেইল এসেছে।’ এই হলো কাবাডি ফেডারেশনের পেশাদারিত্ব!
‘মেয়েদের বিশ্বকাপে আমাদের প্রথম লক্ষ্য পদক (ব্রোঞ্জ) নিশ্চিত করা। এরপর তার রং পরিবর্তনের (রুপা বা স্বর্ণ) চেষ্টা করব। তা ছাড়া এশিয়াডের পদকও পুনরুদ্ধার করতে চাই।’ বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) ডাচ-বাংলা অডিটরিয়ামে কথাগুলো বলেন সোহাগ। ৩-১০ আগস্ট হায়দরাবাদের গাচিবলি ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল বিশ্বকাপ।
এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার ১৪টি দেশ অংশ নেওয়ার কথা। স্থগিত জানা না থাকায় এ উপলক্ষে সিনিয়র রুপালি আক্তারকে অধিনায়ক করে ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করে ফেডারেশন। এরা হলেনÑ রুপালি আক্তার সিনিয়র (অধিনায়ক), শ্রাবণী মল্লিক, বৃষ্টি বিশ্বাস, স্মৃতি আক্তার, রেখা আক্তারী, মেবি চাকমা, রুপালি আক্তার জুনিয়র, দিশা মনি সরকার, সুচরিতা চাকমা, খাদিজা খাতুন, লোবা আক্তার, তাহরিম, ইসরাত জাহান সাদিকা ও আঞ্জুমান আরা রাত্রি। এই টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ারে ইতি টানবেন বলেই রুপালি আক্তার সিনিয়রকে অধিনায়ক করা হয়েছে।
গত সাত বছর ধরে একই বুলি আওড়ে চলেছেন কাবাডির কর্তারা। কিন্তু ২০১৮ সালে জাকার্তা এশিয়াডে হারানো সেই হৃত গৌরব আর ফিরিয়ে আনতে পারছেন না তারা। সবশেষ ২০১৪ ইনচন এশিয়াডে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিল মেয়েরা। তারও আট বছর আগে ২০০৬ সালে ছেলেরা সবশেষ পদক জেতে। তার পরও আশার বাণী শুনিয়ে আগামী এক বছরের পঞ্জিকা ঘোষণা করে কাবাডির অ্যাডহক কমিটি, যেখানে ঘরোয়া জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপসহ আন্তর্জাতিক আসরে অংশ নেওয়ার ফিরিস্তিও রয়েছে। কিন্তু অতীতেও দেখা গেছে, চমক আর জাঁকজমকপূর্ণ খেলার আয়োজন করেও আন্তর্জাতিক আসরে পদক পুনরুদ্ধার করতে পারেনি তারা। যদিও কাল আবারও সেই প্রতিশ্রুতি দিলেন সোহাগ। তার কথা, ‘আমরা লক্ষ্যে কাজ শুরু করতে চাই। এতে ফল পাব আশা করি।’ এই লক্ষ্য পূরণে মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতনে অনূর্ধ্ব-১৮ দলের ২০ মেয়েকে দুই বছরের জন্য নিবিড় ক্যাম্পে রাখতে চায় ফেডারেশন।
গোপালগঞ্জের মহিলা ক্রীড়া সংস্থাকে কাবাডি কমপ্লেক্স হিসেবে ব্যবহারের জন্য ২০ বছরের লিজ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। ১২ একর জায়গার ওপরে সেই কমপ্লেক্স তৈরির কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে বলে জানানো হয়।
পল্টনে একটি ছয়তলা বিল্ডিং ও কোর্ট থাকলেও গোপালগঞ্জে আলাদা কমপ্লেক্স দেওয়া হয়েছে কাবাডিকে। অথচ এস এ গেমসে নিয়মিত পদকজয়ী কারাতে, কুস্তি এবং উশুর মতো ফেডারেশনগুলোর নিজস্ব কোনো ভেন্যু নেই। এ নিয়ে কারো কোনো পদক্ষেপ নেই বলে ক্ষোভ রয়েছে ভেন্যুহীন এসব ক্রীড়া ফেডারেশনের।