ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের কোনো ভূমিকা নেই: জয়শঙ্কর

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৫, ০৩:১৫ এএম
পার্লামেন্টে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি- সংগৃহীত

ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

সোমবার সংসদে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আলোচনার সময় তিনি বলেন, ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে ১৭ জুন যুদ্ধবিরতি পর্যন্ত মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে কোনো কথোপকথন হয়নি।

এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিনি কূটনৈতিক ও বাণিজ্য আলোচনার মাধ্যমে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধ ঠেকিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি বলেছিলাম, ভাইসব, পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র না ছুড়ে তোমরা বরং নিজেদের দারুণ পণ্য বিনিময় করো।

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, তার মধ্যস্থতায় সংঘাত থেমে গেছে।

তবে জয়শঙ্কর জানান, এই দাবি ভিত্তিহীন। কোনো পর্যায়েই বাণিজ্য চুক্তির সঙ্গে যুদ্ধবিরতির সম্পর্ক ছিল না।

তিনি আরও বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রনীতি কেউ বাইরে থেকে নির্ধারণ করে না।

সংসদে দেওয়া বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ নিয়ে কোনো আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার প্রয়োজন নেই। জুনে ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির ফোনালাপে এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ৯ মে রাতে প্রধানমন্ত্রী মোদি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সকে ফোন করে পাকিস্তানের সম্ভাব্য ‘ভয়াবহ হামলা পরিকল্পনার’ বিষয়ে সতর্ক করেন। এরপর পাকিস্তানের পক্ষ থেকেই শান্তি আলোচনার আগ্রহ আসে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ভারতকে জানান, ইসলামাবাদ আলোচনায় আগ্রহী। পরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ডিজিএমও ভারতের কাছে শান্তির প্রস্তাব পাঠান।

জয়শঙ্কর জানান, পেহেলগাম হামলার পর ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল তৎক্ষণাৎ এবং কড়া। এর মধ্যে অন্যতম ছিল সিন্ধু পানিচুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করা এবং বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক প্রচারাভিযান চালানো। ভারতের অবস্থানকে ব্যাখ্যা করতে বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিদের যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্রদেশগুলোতে পাঠানো হয়।

জাতিসংঘের ১৯০টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে মাত্র তিনটি দেশ ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর বিরোধিতা করেছে বলে জানান জয়শঙ্কর। বিশ্ব সম্প্রদায় ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে বলেই তিনি মন্তব্য করেন।

বক্তব্য চলাকালেই সংসদে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিরোধী দলগুলোর একাধিকবার বাধার মুখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাঁড়িয়ে জয়শঙ্করের বক্তব্যের পক্ষে অবস্থান নেন।

বক্তব্যের শেষে জয়শঙ্কর বলেন, আমাদের বন্ধু দেশগুলোকে দুটি বার্তা দেওয়া হয়েছে-এক, সন্ত্রাসবাদে আমাদের সহনশীলতা নেই; দুই, ভারত তার জনগণকে রক্ষার পূর্ণ অধিকার রাখে।