ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক কমার পরই ভারতের টেক্সটাইল শেয়ারে ধস

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫, ০৬:০৩ পিএম
ভারতের একটি পোশাক কারখানা। ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর জন্য শুল্ক হ্রাসের ঘোষণা দেওয়ার পরই ভারতীয় টেক্সটাইল কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য শুক্রবার বড় ধরনের পতনের মুখে পড়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কিটেক্স, পার্ল গ্লোবাল, কেপিআর মিল এবং ওয়েলস্পান লিভিং-এর মতো শেয়ারগুলো ৭ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে যায়। গোকুলদাস এক্সপোর্টসের শেয়ার ৩ দশমিক ১ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৮২৪.৫০ রুপিতে, পার্ল গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিজ ৭ দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৩৮০.০৫ রুপিতে, আরভিন্দ লিমিটেড ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ৩১০.৪০ রুপিতে এবং ওয়েলস্পান লিভিং ১ দশমিক ৯ শতাংশ পড়ে ১২৩.৮০ রুপিতে। কেপিআর মিলের শেয়ার ৪ দশমিক ৩ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ১,০৯২ রুপিতে।

এটি ঘটে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের পরেই, যেখানে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত তৈরি পোশাক (আরএমজি) বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে, যেখানে দেশটি ইতোধ্যেই একটি প্রধান রপ্তানিকারক।

একইসঙ্গে, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি সই করেছে, যার আওতায় দেশটির পণ্যের ওপর শুল্ক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ১৯ শতাংশ করা হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, উভয় দেশ ভবিষ্যতে তেল অনুসন্ধান প্রকল্পেও একসঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনা করেছে, যদিও অতীতে পাকিস্তানের রিজার্ভ অনুসন্ধানের প্রচেষ্টা সফল হয়নি।

নতুন মার্কিন শুল্ক হারের তালিকায় দেখা গেছে, ৫০টিরও বেশি দেশের ওপর শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ (২০ শতাংশ), পাকিস্তান (১৯ শতাংশ), ভিয়েতনাম (২০ শতাংশ) এবং মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনের মতো বিভিন্ন আসিয়ান দেশ (১৯ শতাংশ)। বিপরীতে, ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ থাকছে।

এই শুল্কনীতিকে ‘বৈষম্যমূলক’ হিসেবে মনে করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের মধ্যে, বিশেষ করে শ্রমনির্ভর খাত যেমন টেক্সটাইল ও উচ্চমূল্যের ইলেকট্রনিক্সে, যাদের মার্কিন বাজারে দামের দিক থেকে প্রতিযোগিতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। কারণ, এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, ভারত যদি আরও অনুকূল বাণিজ্য চুক্তি করতে না পারে, তবে কম শুল্কপ্রাপ্ত দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় দেশটির রপ্তানিকারকদের মার্কেট শেয়ার ধরে রাখা কঠিন হবে।