ঢাকা রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫

সিন্দুর অভিযানে ৬ পাকিস্তানি বিমান ভূপাতিতের দাবি ভারতের

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ০৪:৫২ পিএম
ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধান এপি সিং। ছবি- সংগৃহীত

অপারেশন সিন্দুরে পাকিস্তানের একটি বড় বিমানসহ আরও পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে ভারতীয় বিমানবাহিনী। এই অভিযানের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানি বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত প্রকাশ করল তারা।

শনিবার (৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৭ মে পেহেলগাম হামলার পর চালানো অভিযানে যে ‘বড় পাখি’ ভূপাতিত করা হয়, সেটি ছিল একটি এইডব্লিউ/&সি (এয়ারবর্ন আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল) বিমান। এর ধ্বংস পাকিস্তানের বিমানশক্তির জন্য বড় ধাক্কা ছিল।

আকাশে ধ্বংস হওয়া ছয়টি বিমানের পাশাপাশি ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধান এপি সিং জানান, পাকিস্তানের কয়েকটি বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে স্থলভাগেও তাদের বিমান ধ্বংস করা হয়েছে।

বেঙ্গালুরুতে বার্ষিক ১৬তম এয়ার চিফ মার্শাল এলএম কাট্রে বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে পাঁচটি নিশ্চিত বিমান ধ্বংসের প্রমাণ আছে এবং একটি বড় বিমান, যা ইলিন্ট বা এইডব্লিউ/&সি হতে পারে। ৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে ভূপাতিত করা হয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে দূরের সারফেস টু এয়ার অ্যাটাক।’

বিমানবাহিনী প্রধান বলেন রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ‘গেম-চেঞ্জার’ আখ্যা দিয়ে জানান, পাকিস্তান এ ব্যবস্থা ভেদ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অসাধারণ কাজ করেছে। সম্প্রতি কেনা এস-৪০০ সিস্টেম তাদের বিমানগুলোকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তারা দীর্ঘপাল্লার গ্লাইড বোমাও ব্যবহার করতে পারেনি, কারণ সিস্টেমটি ভেদ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।’

তিনি আরও জানান, পাকিস্তানের জ্যাকোবাবাদ ও ভোলারিতে আইএএফ বিমান হামলায় হ্যাঙ্গার ধ্বংস করা হয়। জ্যাকোবাবাদে রক্ষণাবেক্ষণাধীন কয়েকটি মার্কিন তৈরি এফ-১৬ ধ্বংস হয় এবং ভোলারিতে আরেকটি এইডব্লিউ/&সি বিমান ধ্বংস হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, ভারতীয় বাহিনীর হামলায় পাকিস্তানের এত ক্ষতি হয় যে তারা বুঝতে পারে সংঘর্ষ চালিয়ে গেলে আরও বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এই কারণেই পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানাতে বাধ্য হয়। শত্রুতা শেষ হয় ১০ মে।

এয়ার চিফ মার্শাল সিং জানান, আক্রমণ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তিই সাফল্যের অন্যতম প্রধান কারণ।

তিনি বলেন, ‘আমাদের খুব স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কোনো বাহ্যিক বিধিনিষেধ ছিল না, সীমাবদ্ধতা থাকলে তা ছিল নিজের তৈরি। কতটা এগোতে হবে, তা আমরা নিজেরাই ঠিক করেছি। পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ছিল সম্পূর্ণ স্বাধীনতা। আক্রমণগুলো আমরা ক্যালিব্রেট করে চালিয়েছি, কারণ আমরা পরিপক্বতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামলাতে চেয়েছিলাম।’

তিনি ৭ মে হামলার সময় ‘সন্ত্রাসী’ ঘাঁটিগুলোর ‘পূর্ব ও পরবর্তী’ স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে শুধু স্যাটেলাইট ছবি নয়, স্থানীয় গণমাধ্যম থেকেও ভেতরের ছবি ছিল। বালাকোট হামলার পর আমরা দেখেছি, প্রমাণ ছাড়া মানুষকে বোঝানো কঠিন।’

সিন্দুর অভিযানে ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে শতাধিক সন্ত্রাসীকে হত্যা করে। এই অভিযান চালানো হয় ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সংঘটিত গণহত্যার প্রতিশোধ হিসেবে, যেখানে ‘সন্ত্রাসী’রা ২৬ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছিল।