বাংলা ভাষাভাষীদের ওপর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চলা হয়রানি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমত্য সেন। শুক্রবার (২২ আগস্ট) কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, কিছু বাংলাভাষীকে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে সীমান্ত দিয়ে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে (পুশ ইন)।
বার্তা সংস্থা পিটিআই জানায়, ঢাকায় পরিবারের শেকড় থাকার কারণে তাকে নিজেকেও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ৯১ বছর বয়সী অমর্ত্য সেন।
নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘খবরের কাগজে দেখেছি বাংলায় কথা বলায় একজনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এটা আমাকে চিন্তায় ফেলেছে। সিদ্ধান্ত নিলাম, ফরাসি ভাষায় কথা বলবো, কিন্তু ফরাসি জানি না। ঢাকায় আমার পূর্বপুরুষের বাড়ি রয়েছে। তাই আমাকে হয়তো বাংলাদেশে পাঠানো হতে পারে। তবে এতে আমি খুব আপত্তি করব না।’
বাংলাভাষীদের হয়রানি নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় সভ্যতার বৈচিত্র্যকে সম্মান করা প্রয়োজন। প্রত্যেক সাংস্কৃতিক পরিচয় উদ্যাপনের যোগ্য। বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার ইতিহাসে জোর দিতে হবে। যদি না হয়, প্রতিবাদ জরুরি।’
আগে সীমান্ত দিয়ে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা মাঝেমধ্যে হলেও বড় আকারে শুরু হয়েছে গত ২২ এপ্রিলের পেহেলগাম হামলার পর। ওই হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। এরপর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন রাজ্যে কথিত ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ ধরপাকড় শুরু করে।
২৭ এপ্রিল গুজরাটে এক হাজার ২৪ বাংলাদেশিকে আটক করার তথ্য পাওয়া যায়। এরপর সীমান্ত এলাকা দিয়ে মানুষ ঠেলে পাঠানো শুরু হয়। ‘অবৈধ অভিবাসী’ সন্দেহে গ্রেপ্তার বাংলাভাষীদের বিমানে বাংলাদেশ সীমান্তে আনা হচ্ছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সময় মতো তাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে।
বাংলাভাষীদের হয়রানির খবর ভারতের সংবাদমাধ্যম ছাড়াও বিবিসি ও নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশ হয়েছে। মূলত ২০২৪ সালে বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে সীমান্তে বাংলাভাষীদের ঠেলে দেওয়ার ঘটনায় ভারত সরকারের বিরুদ্ধে সে দেশের নাগরিকদের হয়রানি ও ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন