আজ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যুক্ত হচ্ছে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তপশিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে উভয় নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
তপশিলকে অনেকেই কেবল ভোটের তারিখ ঘোষণার বিষয় মনে করেন, তবে বাস্তবে তফসিল হলো নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়ার আইনসম্মত সময়সূচি। এতে মনোনয়ন জমা থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত থাকে। সাধারণত তপশিল ঘোষণার পর থেকে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত ৪০ থেকে ৪৫ দিনের ব্যবধান রাখা হয়।
তপশিল আসলে একটি নির্বাচনী রূপরেখা, যেখানে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি ধাপের সময় নির্দিষ্ট করা হয়। এটি এক অর্থে পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার আইনি ভিত্তি।
কোন দিনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে, কোন তারিখে যাচাই-বাছাই হবে, মনোনয়ন বাতিল হলে কখন পর্যন্ত আপিল করা যাবে- এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এতে থাকে।
একই সঙ্গে তফসিলে উল্লেখ থাকে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ, প্রতীক বরাদ্দ, নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর দিন ও শেষ সময়, ভোট গ্রহণের সময়সূচি এবং ভোট গণনার পদ্ধতি ও স্থান।
নির্বাচনের দিন-তারিখ নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক বিষয় সংবিধানে উল্লেখ থাকে। যেমন সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণের বাধ্যবাধকতা।
তবে এই সময়ের ভেতর কোন দিন ভোট হবে, মনোনয়নের সময়সীমা কতদিন- এসব সিদ্ধান্ত কমিশনারদের আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। প্রয়োজনে তপশিল সংশোধনও করতে পারে নির্বাচন কমিশন; যেমন ২০০৮ সালে প্রথমে ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচন নির্ধারণ করা হলেও রাজনৈতিক আলোচনার ভিত্তিতে পরে তা ২৯ ডিসেম্বর করা হয়।
আজকের তপশিল ঘোষণার পরই নির্বাচনী তৎপরতা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে যাবে। প্রার্থীরা জানতে পারবেন তাদের মনোনয়ন জমা, যাচাই–বাছাই ও প্রচারণার সময়সূচি। আর ভোটাররা জানতে পারবেন কখন হবে ভোট, কখন শুরু হবে প্রচারণা এবং পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া কীভাবে এগোবে। আজকের ঘোষণার মধ্য দিয়েই শুরু হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের আনুষ্ঠানিক উত্তাপ, যা বাড়তে থাকবে ভোটের দিন পর্যন্ত।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন