ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

ভিক্ষুক সেজে পাকিস্তানে ঘুরতেন অজিত দোভাল

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম
ভারতীয় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। ছবি- সংগৃহীত

ভারতের বর্তমান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল একসময় পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করেছিলেন। সেই সময় পাকিস্তানের অভ্যন্তর থেকে বেশ কিছু গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।

সম্প্রতি প্রকাশিত ‘অজিত দোভাল-অন এ মিশন’ বইতে এই ঘটনাগুলোর একটি বিস্ময়কর অধ্যায় তুলে ধরা হয়েছে।

লেখক ডি দেবদত্ত বইতে উল্লেখ করেছেন, পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহে দোভাল ছিলেন ভারতের প্রধান ভরসা। সময়টা ছিল সত্তরের দশকের মাঝামাঝি। ১৯৭৪ সালে ভারত যখন প্রথম পারমাণবিক শক্তির ঘোষণা দেয়, তখন পাকিস্তানও একই পথে এগোতে মরিয়া। এ সময় তারা চীন ও উত্তর কোরিয়ার সহায়তাও পেতে শুরু করে।

তখন ইসলামাবাদের কাছে কাহুতা গ্রামে অবস্থিত ‘খান রিসার্চ সেন্টার’-এর গতিবিধি বোঝা ছিল ভারতের জন্য অত্যন্ত জরুরি। আর সেই মিশনে ছিলেন আন্ডারকভার এজেন্ট অজিত দোভাল।

বইতে বলা হয়েছে, দোভাল ভিক্ষুকের ছদ্মবেশে কাহুতার আশপাশে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। স্থানীয় মানুষ তাকে সাধারণ ভিক্ষুক ভেবেই দেখত। কিন্তু তার আসল নজর ছিল গবেষণা কেন্দ্রে আসা বিজ্ঞানীদের ওপর।

একদিন তিনি লক্ষ্য করেন, নিকটস্থ এক নরসুন্দরের দোকানে নিয়মিত যাতায়াত করছে ওই কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। সুযোগ হাতছাড়া করেননি দোভাল। দোকানের বাইরে বসে থেকে তিনি সেখানে কাটা চুল সংগ্রহ করতেন। পরবর্তীতে সেই চুল ভারতে পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য।

পরীক্ষার ফল ছিল বিস্ময়কর। বিজ্ঞানীদের চুলে ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এই তথ্য পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি উন্মোচনে ভারতের জন্য ছিল একটি বড় প্রমাণ। এমনকি বইতে দাবি করা হয়েছে, এই তথ্য পাকিস্তানের পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর সক্ষমতাকে প্রায় ১৫ বছর বিলম্বিত করেছিল।

এই অভিযানে দোভাল ছয় বছর পাকিস্তানে গোপনে বসবাস করেন। জীবন ঝুঁকির মুখে থেকেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহে সফল হন। লেখক ডি দেবদত্ত এটিকে দোভালের অন্যতম সাহসী ও উদ্ভাবনী গোয়েন্দা অভিযান হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

সূত্র: মানি কন্ট্রোল