ইসরায়েলি আগ্রাসনে শুধু ফিলিস্তিন নয় পুড়ছে পুরো বিশ্ব। ক্ষেপণাস্ত্র-গুলি-বোমার বারুদ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়ে বৈশ্বিক জলবায়ু উত্তপ্ত হয়ে বিষাক্ত হচ্ছে পৃথিবী।
ইসরায়েলি বোমা হামলায় বৈশ্বিক জলবায়ুর ভারসাম্যে গরমিল হয়ে পৃথিবীর প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়ছে উত্তাপ এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের একদল জলবায়ু গবেষক।
যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের যৌথ এক গবেষণায় জানা গেছে, গাজা-ইসরায়েল সামরিক আগ্রাসন এবং যুদ্ধপরবর্তী পুনর্গঠন থেকে সৃষ্ট কার্বন নিঃসরণ শতাধিক দেশের সম্মিলিত বার্ষিক কার্বন নিঃসরণ থেকেও বেশি।
এ রকম মহাবিপর্যয়ের মধ্যেও পরিবেশ সুরক্ষাবাদীদের নিশ্চুপ থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুরাষ্ট্র বলেই চুপ আছেন আন্দোলনকারীরা।
গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, গাজা ধ্বংস, ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার ও পুনর্গঠনের মাধ্যমে সৃষ্ট কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ৩১ মিলিয়ন টন ছাড়িয়ে যেতে পারে। যা ১০০টি স্বতন্ত্র দেশের সম্মিলিত বার্ষিক নির্গমনের সমান। যুদ্ধ শুরুর প্রথম ৬০ দিনে আনুমানিক ২ লাখ ৮১ হাজার টন কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ হয়েছে। এর ৯৯ শতাংশের বেশি দায় ইসরায়েলের বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের। এ ছাড়া যুদ্ধ শুরুর পর মাত্র ১২০ দিনের মধ্যেই (অক্টোবর ২০২৩-ফেব্রুয়ারি ২০২৪) ইসরায়েলি হামলা থেকে যে পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়েছে তা বিশ্বের ২৬টি দেশ ও অঞ্চলের পুরো এক বছরের মোট নির্গমনের পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে। এই সময়ে ইসরায়েলের হামলা থেকে আনুমানিক ৪২০,২৬৫ থেকে ৬৫২,৫৫২ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়েছে।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, পুরো যুদ্ধকালীন সময়ে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা ০.২ শতাংশ এসেছে হামাসের রকেট ও টানেল নির্মাণে ব্যবহৃত জ্বালানি থেকে। অন্যদিকে, ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যবহৃত অস্ত্র, ট্যাংক ও গোলাবারুদ থেকে ৫০ শতাংশ কার্বন নিঃসরিত হয়েছে। এ ছাড়া, গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের পাশাপাশি ইয়েমেন, ইরান ও লেবাননের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতে সৃষ্ট জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি বিশ্লেষণ করে গবেষকরা জানিয়েছেন, এই সবকিছুর সম্মিলিত প্রভাব ৮৪টি গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে এক বছর চালানোর সমান কার্বন নির্গত করেছে। এই বিপুল পরিমাণ নির্গমন জলবায়ুর ওপর বিরাট প্রভাব ফেলছে।
আপনার মতামত লিখুন :