শনিবার, ০৭ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৫, ১২:৪০ পিএম

গাজায় ‘সশস্ত্র’ গোষ্ঠীগুলোকে ইসরায়েলি সমর্থনের কথা স্বীকার করলেন নেতানিয়াহু

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৫, ১২:৪০ পিএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্বীকার করেছেন যে, তার দেশ হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য গাজায় সশস্ত্র গোষ্ঠী ব্যবহার করছে। এই স্বীকারোক্তি এমন এক সময় এলো যখন গাজা উপত্যকায় নতুন করে সামরিক হামলায় অন্তত ৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) এক্সে পোস্ট করা এক ভিডিও বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের’ পরামর্শে সরকার গাজার শক্তিশালী স্থানীয় গোষ্ঠীগুলোকে 'সক্রিয়' করেছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগডর লিবারম্যান নেতানিয়াহুকে এই কৌশল অবলম্বনের জন্য অভিযুক্ত করেছিলেন।

এই বিবৃতির মাধ্যমে সরকার প্রথমবারের মতো জনসমুক্ষে স্বীকার করলো যে তারা শক্তিশালী পরিবারগুলোর চারপাশে গড়ে ওঠা সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিয়েছে। সাহায্য কর্মীরা এই গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক হামলা চালানো এবং ইসরায়েলি অবরোধের কারণে সমগ্র অঞ্চলজুড়ে ব্যাপক খাদ্য সংকটের মধ্যে ত্রাণ চুরি করার অভিযোগ এনেছেন।

সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, নেতানিয়াহু যে গোষ্ঠীগুলোর কথা উল্লেখ করছেন, তার মধ্যে একটি হলো তথাকথিত ‘পপুলার ফোর্সেস’। রাফাহর স্থানীয় গোত্রীয় নেতা ইয়াসির আবু শাবাব এই গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দেন।

গত মাসে ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজ এই গোষ্ঠীর কার্যকলাপ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। যদিও প্রতিবেদনে এটিকে “অ্যান্টি-টেরর সার্ভিস” নামে উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গাজার সূত্রগুলো দাবি করেছে, এতে প্রায় ১০০ সশস্ত্র লোক রয়েছে যারা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নীরব সমর্থনে কাজ করে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, আবু শাবাব গোষ্ঠী অনলাইনে ঘোষণা করেছে যে তাদের যোদ্ধারা নতুন মার্কিন ও ইসরায়েল-সমর্থিত 'গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন' (জিএইচএফ) পরিচালিত বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহের সুরক্ষায় সহায়তা করছে।

সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার হামদাহ সালহুত জর্ডানের রাজধানী আম্মান থেকে জানিয়েছেন, ‘ইসরায়েলি বিরোধী দল দাবি করেছে যে ইসরায়েলি সরকার বা মন্ত্রিসভার মধ্যে কোনো পরামর্শ হয়নি।'

তিনি আরও বলেন, ‘নেতানিয়াহু বলছেন যে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো... মূলত ইসরায়েলিদের গাজায় হামাসকে পরাজিত করতে সাহায্য করতে পারে।’

তিনি যোগ করেন, ‘কিন্তু ইসরায়েলের ভেতরে এটি ভালোভাবে গ্রহণ করা হচ্ছে না, যেখানে মানুষ বলছে যে এগুলো গাজা উপত্যকার মধ্যে সশস্ত্র অপরাধী চক্র। তাদের সশস্ত্র করা উচিত নয় এবং এগুলো ইসরায়েলি অস্ত্র যা তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।'

‘মানব কসাইখানা'

নেতানিয়াহুর এই বিবৃতি গাজায় আরও একটি ভয়াবহ দিনের মধ্যে এসেছে। যখন সামরিক বাহিনী অবরোধের শিকার উপকূলীয় অঞ্চলের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, যেখানে তীব্র অবরোধের কারণে জনগণ গণ-অনাহারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।

গত সপ্তাহ থেকে জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে ১০০ জনেরও বেশি নিহত এবং আরও অনেকে আহত হওয়ার ঘটনা ব্যাপক নিন্দার জন্ম দিয়েছে। ইসরায়েলি সৈন্যরা গত সপ্তাহ থেকে চারবার ত্রাণপ্রত্যাশী ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) সাবেক মুখপাত্র ক্রিস গাননেস আল-জাজিরাকে বলেছেন, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম গাজাকে ‘মানব কসাইখানায়’ পরিণত করেছে।

তিনি বলেন, ‘শত শত বেসামরিক লোককে পশুর মতো বেড়া দেওয়া খামারে জড়ো করা হচ্ছে এবং প্রক্রিয়ার মধ্যে গবাদি পশুর মতো জবাই করা হচ্ছে।’

ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে জিএইচএফ বুধবার একদিনের জন্য তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এবং পরের দিন ঘোষণা করে যে, তারা দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় দুটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র পুনরায় খুলবে। তবে কখন ত্রাণ বিতরণ শুরু হবে তা তারা জানায়নি।

হাসপাতাল সূত্র আল-জাজিরাকে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার অন্তত ৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সূত্রগুলো জানিয়েছে, খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ৩১টি এবং গাজা সিটির আল-আহলি আরব ও আল-শিফা হাসপাতালে ২১টি মরদেহ আনা হয়েছে।

গাজা সিটির আল-আহলি হাসপাতালে (ব্যাপটিস্ট হাসপাতাল নামেও পরিচিত) ইসরায়েল চারজন সাংবাদিককে একটি হামলায় হত্যা করেছে।

গাজা সিটির বাসিন্দা ফাদি আল-হিন্দি আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, তিনি আল-নাসের স্ট্রিটে আল-শিফা হাসপাতালের কাছে একটি হামলা দেখেছেন। নিজের সন্তানদের খোঁজ নিতে তাঁবুর বাইরে ছুটে গিয়ে তিনি মৃত্যুর দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন।

তিনি বলেন, ‘যখন আমি পৌঁছলাম, তখন দেখলাম একজন লোক ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে আছে; সে সাইকেল চালাচ্ছিল, এবং তার শরীরের নিচের অংশ ছিল না। রাস্তার সবাই আহত হয়েছিল, এবং আমরা আহতদের শরীরের অংশ সংগ্রহ করতে শুরু করেছিলাম।’

এই হামলায় অন্তত তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে, যাদের মধ্যে শিশুরাও ছিল।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা খান ইউনিসের আশেপাশে পাঁচজনের মৃত্যু, উত্তরে বেইত লাহিয়ার পশ্চিমে চারজন এবং গাজা সিটির দক্ষিণে একজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। এছাড়া মধ্য গাজার বুরেইজের কাছে একটি শিশু আহত হয়েছে বলেও জানা গেছে।

ওয়াফা আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ওয়াদি গাজার কাছে একটি ত্রাণ কেন্দ্রে পৌঁছানোর চেষ্টা করা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছে।

এদিকে, হামাসের প্রধান খলিল আল-হাইয়া একটি পূর্ব-রেকর্ডকৃত বক্তৃতায় বলেছেন, গোষ্ঠীটি মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবিত গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেনি, বরং যুদ্ধের অবসান নিশ্চিত করার জন্য কিছু পরিবর্তনের অনুরোধ করেছে।

আল-হাইয়া যোগ করেছেন যে, হামাস আরও আলোচনায় জড়িত হতে প্রস্তুত এবং মধ্যস্থতাকারীদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। ইসরায়েল মার্চ মাসে একটি পূর্ববর্তী যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় যুদ্ধ পুনরায় শুরু করেছিল।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!