ঢাকা সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫

শাসক পরিবর্তন নিয়ে কি ভাবছে ইরানিরা?

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৫, ১০:৫৬ এএম
রাজপথে ইরানের জনগণ। ছবি- সংগৃহীত

ইরান-ইসরায়েলের হামলা-পাল্টা হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। এদিকে, ফক্স নিউজের এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দাবি করে বলেন, বর্তমান ইরানি শাসনব্যবস্থার ওপর ‘জনসমর্থন নেই’। ইরানের ৮০ শতাংশ মানুষ বর্তমান সরকারকে ‘উৎখাত’ করতে চায়। কিন্তু এই অত্যন্ত নাজুক পরিস্থিতিতে ইরানের জনগণ কী ভাবছে?

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর ইরানি জনগণের মধ্যে শাসক পরিবর্তনের জন্য ‘ইসরায়েলের পরিকল্পনা’ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ন্যাশনাল ইরানিয়ান আমেরিকান কাউন্সিলের সভাপতি জামাল আবদি বলেন, ইসরায়েলের এই আক্রমণ ইরানের শাসক পরিবর্তনে সহানুভূতিশীল ইরানিদের বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা (ইরানের ৮০ শতাংশ মানুষ বর্তমান সরকারকে ‘উৎখাত’ করতে চায়) নেতানিয়াহুর একটি বড় ভুল হিসাব।’

জামাল আবদির বলেন, ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বৈধতা সত্যিই সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছিল। ২০২২ সালের নারী, জীবন, স্বাধীনতা প্রতিবাদ ছিল এই শাসন থেকে মুক্তির জন্য ইরানিদের আহ্বানের এক বিশাল বিস্ফোরণ।’

তার মতে, দশকের পর দশক ধরে নেতানিয়াহু একটি লক্ষ্যের ওপরই জোর দিয়েছেন যে, ইরানের শাসক পরিবর্তনের প্রচেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করা উচিত। ইসরায়েলিরাও এতদিন এক মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালিয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল ইরানিদের ওপর আরও বেশি চাপ সৃষ্টি করা এবং সবকিছুর জন্য ইসলামি প্রজাতন্ত্রকে দোষারোপ করা।

আবদি জোর দিয়ে বলেন, ‘নেতানিয়াহু এখন ইরানকে বৈরুতে (লেবানন) পরিণত করার কথা বলছেন। তারা এখন ইরানের শাসন ব্যবস্থা অস্থিতিশীল করার অভিযানে চলে যাচ্ছে।’

আবদির মতে, এই পরিবর্তনের ফলে অনেক মানুষ, বিশেষ করে যারা ইসরায়েলিদের বন্ধু ভাবত, তারা এখন বুঝতে পারছে যে, গাজায় যা এতদিন দেখা গেছে, লেবাননে যা দেখা গেছে এবং এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে যা দেখা গেছে, তা এখন ইরানিদের দিকে ধেয়ে আসছে। 

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘এটা মুক্তি নয়, এটা মৃত্যু।’

এর আগে, পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলার জবাবে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে ‘শত শত বিভিন্ন ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র’ নিক্ষেপ করেছে ইরান

এক ইরানি কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি ও অপরাপর মিলিশিয়ারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এক ভয়ংকর পরিকল্পনার অংশ হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, ঘনিষ্ঠভাবেই ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েল যে বিমান ও অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাচ্ছে, তার বেশির ভাগই এসেছে মার্কিন উৎস থেকে।

মার্কিন বিশ্লেষক রিচার্ড লে’বেরন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র না চাইলেও এই সংঘাতে জড়িয়ে যেতে পারে।’ 

অপরদিকে, বিশেষ সূত্র বলছে, নতুন হামলায় পার্শ্ববর্তী দেশের যোদ্ধারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা আরও বাড়াতে পারে।

আইআরজিসি জানায়, তারা ইসরায়েলের বেশকিছু সামরিক ঘাঁটি, গুপ্তচর ভিত্তি এবং অস্ত্র কারখানায় সঠিক লক্ষ্যভেদে সফলভাবে আঘাত হেনেছে। 

স্যাটেলাইট ছবি ও গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, অনেক কৌশলগত স্থান সফলভাবে ধ্বংস হয়েছে, যদিও ইসরায়েল দাবি করে আঘাত ঠেকানো হয়েছে।