ঢাকা বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫

স্বপরিবারে আহমাদিনেজাদকে হত্যার গুঞ্জন

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৫, ১১:৩৯ পিএম
ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আহমাদিনেজাদ। ছবি- সংগৃহীত

ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আহমাদিনেজাদকে হত্যার গুঞ্জন উঠেছে। বলা হচ্ছে, তাকে গুলি করে হত্যা করেছে ইজরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টরা। এও বলা হচ্ছে, আহমাদিনেজাদকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছে।

গত ১৩ জুন ইরানে বিনা উসকানীতে হামলা চালায় ইসরায়েল। পরদিন পাল্টা হামলা চালায় ইরান। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। এতে উভয় দেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।

তাদের ইরানের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা মারা গেছেন।

এরমধ্যেই স্বপরিবারে ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদকে হত্যার গুঞ্জন উঠল।

ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে হত্যার খবর ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে এ বিষয়ে ইরান বা ইসরায়েল কোন পক্ষ থেকেই বিবৃতি আসেনি।

আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমগুলোও এ নিয়ে কোন সংবাদ প্রকাশ করতে দেখা যায়নি।

কে এই আহমাদিনেজাদ?

ইরানের ইতিহাসে একজন বিরল প্রেডিডেন্ট ছিলেন আহমাদিনেজাদ। তার জন্ম হয়েছিল এক অত্যন্ত গরীব পরিবারে। তার বাবা ছিলেন একজন কামার। ১৯৫৬ সালে তেহরানের পাশে গার্মসার নামে একটি শহরে তার জন্ম।

গরীবের ছেলে হলেও তিনি ট্রান্সপর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্লানিংয়ে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেছিলেন। তবে তার চলাফেলা ছিল অতিসাধারণ।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ২০০৫ সালে। কিন্তু তার জীবনযাপন ছিল আগের মতোই। আভিজাত্য তাকে কখনও স্পর্শ করতে পারেনি।

তিনি প্রেসিডেন্টের বিলাসবহুল বাসভবন ছেড়ে পিতার থেকে পাওয়া বস্তির দুই রুমের ছোট্ট বাড়িতেই বসবাস করতে চেয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু তিনি নিরাপত্তার কারণ এবং সবার অনুরোধে প্রেসিডেন্ট ভবনেই বসবাস করেন। তবে সেখানেও তিনি ফ্লোরে কার্পেটের উপর ঘুমাতেন।

২০১৩ ৩ আগস্ট পর্যন্ত ইরানের প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন। বিদায় নেওয়ার আগেও করে যান ইতিহাস।

 

ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান আয়াতুল্লাহ সাদেক লারিজানির কাছে লেখা এক চিঠিতে আট বছরে অর্জিত সম্পদের হিসাব দিয়ে যান তিনি।

সেখানে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর তার সম্পদের তেমন কোন পরিবর্তনই আসেনি।

আহমাদিনেজাদ প্রেসিডেন্ট থাকাকালে শুধু তার পুরোনো বাড়িটিই পুনর্নিমাণ করেছেন। যদিও বাড়িটি পুন-র্নিমাণের জন্য তিনি ব্যাংক ও প্রেসিডেন্ট দপ্তরের ফান্ড থেকে ঋণ নেন।

তাও প্রেসিডেন্টের দপ্তরের ফান্ড ও ব্যাংক থেকে বাড়ি নির্মাণের জন্য অসংখ্য মানুষ ঋণ নিয়েছেন। তিনিও সাধারণ একজন নাগরিক হিসেবে সেই ঋণ নিয়েছেন।

তা ছাড়া ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোন ধরনের প্রভাব খাটাননি।

সেই সঙ্গে বাবার জমিতে বাড়ি পুনর্নিমাণের ক্ষেত্রে তার স্ত্রী, সন্তান ও স্বজনরাও সহযোগিতা করেছেন।

আহমেদিনেজাদ সবসময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আহমেদিনেজাদ রাজনীতিতে আসেন ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পরপরই।

তিনি ১৯৭০ সালের শেষের দিকে সারকর্ড শহরের মেয়রের উপদেষ্টা হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৮০ সালে তিনি আর্মিতে যোগদান করেন। এরপর তিনি তুর্কী বর্ডারের কাছে মাকু শহরের মেয়র পদে নিযুক্ত হন।

১৯৯০ এর শেষের দিকে তিনি আরদাবিল শহরের গভর্নর পদে নিযুক্ত হন। এরপর তিনি হার্ডলাইন রেভুলেশনারি গার্ডের বিশেষ বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব লাভ করেন। ২০০৩ সালে আহমাদিনেজাদ তেহরানের মেয়র পদে নির্বাচিত হন।