ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫

‘মার্কিন হামলার জবাব দিতে হবে’, ম্যাক্রোঁকে হুঁশিয়ারি পেজেশকিয়ানের

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৫, ০১:৪৮ এএম
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রো (বামে) ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান (ডানে)। ছবি- সংগৃহীত

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে টেলিফোন আলাপে সাফ জানিয়েছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্রের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে জবাবদিহি করতে হবে।

সরকারি বার্তা সংস্থা ইরিনা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, আলাপে পেজেশকিয়ান বলেন, “আমেরিকানদের অবশ্যই তাদের আগ্রাসনের জবাব দিতে হবে।”

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়লো বিশ্বের অন্যতম এই পরাশক্তি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে তোলপাড় শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। এই হামলার মধ্য দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের আশঙ্কা করেছেন অনেক বিশ্বনেতা। হামলার পরপরই নিন্দাও জানিয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ সমাধানের পথ খোঁজার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছেন। 

এদিকে, হামলার প্রতিক্রিয়া হরমুজ প্রণালি বন্ধের অনুমোদন দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের অনুমোদন সাপেক্ষে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রোববার (২২ জুন) ইরানি চ্যানেল প্রেস টিভি এ খবর জানিয়েছে।

বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত তেল ও গ্যাসের প্রায় ২০ শতাংশ এই সমুদ্রপথ দিয়ে যায়। প্রণালীটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে আজ রোববার ইরানের আইনপ্রণেতা ও বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডার ইসমাইল কোসারি বলেছেন, এই পদক্ষেপ এখনো আলোচনার এজেন্ডায় রয়েছে এবং ‘যখন প্রয়োজন হবে, তখনই এটি বাস্তবায়ন করা হবে’।

আগের দিন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ইস্তাম্বুলে আরব লীগের কূটনীতিকদের সঙ্গে ইসরায়েলে-তেহরানের ক্রমবর্ধমান সংঘাত নিয়ে এক বৈঠকে তিনি বলেন, ইরানের সামনে বিভিন্ন বিকল্প রয়েছে, তবে তেহরানের কাছে কূটনীতি এখনও অগ্রাধিকারে রয়েছে।

আরাঘচি ইস্তাম্বুলে এক বক্তৃতায় বলেন, ‘আমাদের হাতে নানা ধরনের বিকল্প রয়েছে। কূটনীতির দরজা অবশ্যই খোলা রাখা উচিত, কিন্তু আমরা এখন এমন অবস্থায় নেই যে ঠিক কীভাবে বা কার সঙ্গে আলোচনায় বসব তা ঠিক করতে পারি। তাই এখনই কিছু বলার সময় নয়—চলুন, আমরা কী প্রতিক্রিয়া দেই, সেটা আগে দেখা যাক।’

গত বৃহস্পতিবার মার্কিন হামলার আগেই ইরান জানিয়েছিল, শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারা হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে। যদিও এক সিনিয়র সংসদ সদস্য বলেছেন, এটা কেবল তখনই হবে যদি তেহরানের গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ হুমকির মুখে পড়ে।

এর আগেও ইরান পশ্চিমা চাপের জবাবে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার হুমকি দিয়েছিল। বুধবার জাহাজ চলাচল-সংক্রান্ত সূত্র জানিয়েছে, বাণিজ্যিক জাহাজগুলো এখন ইরানের জলসীমা এড়িয়ে চলছে।

আধা-সরকারি মেহের বার্তা সংস্থা জানায়, ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য বেহনাম সাঈদী বলেছেন, ‘ইরানের হাতে প্রতিশোধ নেওয়ার নানা পথ আছে, পরিস্থিতি বুঝে আমরা সেগুলো ব্যবহার করি। হরমুজ প্রণালী বন্ধ করাও সম্ভাব্য বিকল্পগুলোর একটি।’

রোববার, যুক্তরাষ্ট্র রাতারাতি ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালানোর পর শিপিং গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মারস্ক কোম্পানির জাহাজ এখনো হরমুজ প্রণালী দিয়ে চলাচল করছে, তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের পরিকল্পনা পুনর্মূল্যায়ন করা হতে পারে।