বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম

ইরান পরিস্থিতিতে পারমাণবিক নীতিতে আরও কঠোর হচ্ছে কিম জং উন

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম

উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন । ছবি- সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন । ছবি- সংগৃহীত

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার সিদ্ধান্ত উত্তর কোরিয়ার দীর্ঘদিনের বিশ্বাস আরও শক্তিশালী করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন এখন আরও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করছে, পারমাণবিক অস্ত্রের শক্তি ছাড়া শাসনব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কম্বোডিয়ান সংবাদ মাধ্যম ‘নমপেন পোস্ট’।

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতের এই নতুন অধ্যায় উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নীতিতে আরও কঠোরতা আনবে। একইসঙ্গে কোরীয় উপদ্বীপের নিরাপত্তা পরিস্থিতিও নতুন করে উত্তপ্ত হতে পারে। এছাড়া এই হামলার পর উত্তর কোরিয়া ওয়াশিংটনের প্রতি আরও অবিশ্বাসী হয়ে উঠবে। 

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচির মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। 

ইরান যেখানে এখনও পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পথে রয়েছে এবং কর্মসূচিটি জাতীয় গৌরব ও প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে গড়ে তুলেছে, সেখানে উত্তর কোরিয়া ইতিমধ্যে পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির মালিক এবং তাদের মূল লক্ষ্য হলো শাসক কিম পরিবার ও শাসনব্যবস্থার টিকে থাকা।

বিশ্লেষকদের মতে, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইরানের মতো হামলার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। কারণ উত্তর কোরিয়ার পাল্টা হামলার সক্ষমতা রয়েছে।

দেশটির আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র মার্কিন মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে পারে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল ও আশপাশের জনবহুল এলাকাগুলোতে প্রচুর সংখ্যক কামান ও রকেট হামলা চালানোর সক্ষমতা রয়েছে।

সিওল ডিফেন্স ফোরামের জ্যেষ্ঠ গবেষক জোং কিয়ং-উনের ভাষায়, সিউল ও আশপাশের অঞ্চল উত্তর কোরিয়ার কামানের একেবারে নাগালের মধ্যে রয়েছে।

এই বাস্তবতা ১৯৯৪ সালের নিউক্লিয়ার সংকটের সময়ও সামনে এসেছিল, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন ইয়ংবিয়ন পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার পরিকল্পনা বাতিল করেন।

উত্তর কোরিয়ার হাতে রয়েছে ১৭০ মিমি স্বচালিত কামান, ২৪০ মিমি মাল্টিপল রকেট লঞ্চার এবং পারমাণবিক সক্ষম স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র KN-23। একইসঙ্গে, দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলো গভীর পাহাড়ি অঞ্চলে শক্ত পাথরের নিচে স্থাপিত, যা ধ্বংস করা অত্যন্ত কঠিন।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উত্তর কোরিয়া ‘প্রথম আঘাত হানার নীতি’ গ্রহণ করেছে। অর্থাৎ, শুধু প্রতিরক্ষামূলক নয়, শত্রুর হামলার আশঙ্কা দেখলে তারা আগেভাগেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অধিকার রাখছে।

এই পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়ার অবস্থান আরও শক্তিশালী করছে রাশিয়া ও চীনের ভূমিকা। ২০২৪ সালের জুন মাসে কিম জং-উন ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন “ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি” স্বাক্ষর করেছেন, যাতে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা বাধ্যবাধকতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। চীনও কোরীয় উপদ্বীপে স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হলে তা মেনে নেবে না।

ইহওয়া ওমেন্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লেইফ-এরিক ইসলে মনে করেন, চীন ও রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে ইরানের চেয়ে অনেক বেশি শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ইরানের ওপর মার্কিন হামলা দেখে উত্তর কোরিয়া আরও দৃঢ় হয়েছে যে, পারমাণবিক অস্ত্রই তাদের টিকে থাকার একমাত্র পথ। উত্তর কোরিয়া বিষয়ক অধ্যাপক কিম ডং-ইয়ুবের মতে, এই হামলার ফলে কোরীয় উপদ্বীপের নিরাপত্তা পরিবেশেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে।

অন্যদিকে, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া এবং ২০১৯ সালের ট্রাম্প-কিম শীর্ষ বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে পিয়ংইয়ং-এর অবিশ্বাস আরও গভীর হয়েছিল। ইরান হামলার ঘটনার পর সেই অবিশ্বাস আরও কঠিন হলো।

অধ্যাপক লিম ইউল-চুল বলছেন, এখন থেকে উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা আরও বাড়ানোর পথেই এগোবে। পাশাপাশি রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সামরিক সহযোগিতা গড়ে তুলবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপের ব্যাপারে আরও সংশয়ে থাকবে।

Link copied!