ইসরায়েলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক প্রযুক্তির গোপন নথি ফাঁস করেছে একটি প্রতিরোধপন্থী সাইবার ইউনিট। দাবি করা হচ্ছে, এই হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল তাদের বহুদিনের একচেটিয়া সামরিক প্রযুক্তির দখল হারিয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ এজেন্সি এই তথ্য জানিয়েছে।
হামলাকারী গোষ্ঠী ‘সাইবার সাপোর্ট ফ্রন্ট’ জানায়, তারা ইসরায়েলি সামরিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান সিআর কাস্টিং/এক্সাক্ট (CR Casting/EXACT)-এর সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করে দুটি উন্নত প্রযুক্তির গোপন নথি ফাঁস করেছে।
প্রথমটি হলো হ্যাটোরিক্স (HattoriX)। এটি স্থলভিত্তিক গোয়েন্দা ও লক্ষ্য শনাক্তকরণ ব্যবস্থা, যা দূরপাল্লার নিখুঁত হামলার জন্য ব্যবহৃত হয়।
দ্বিতীয়টি হলো স্পাইক-এলআর ২ (SPIKE-LR2)। পঞ্চম প্রজন্মের মাল্টি-প্ল্যাটফর্ম বিশিষ্ট একটি স্মার্ট গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, যা আধুনিক যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ডিজাইন করা হয়েছে।
উভয় প্রযুক্তিই ইসরায়েলের রাফায়েল ও এলবিট সিস্টেমসের চুক্তিভিত্তিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিআর কাস্টিং/এক্সাক্ট তৈরি করেছে।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের বরাতে তাসনিম জানিয়েছে, এই প্রযুক্তিগুলো সম্প্রতি গাজা, লেবানন এবং ইরানে চালানো সামরিক অভিযানে ব্যবহারের জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল।
সাইবার হামলার পেছনের উদ্দেশ্য
সাইবার সাপোর্ট ফ্রন্টের দাবি, তারা শুধু প্রযুক্তি ফাঁস করেনি, বরং ইসরায়েলের সামরিক-শিল্প নেটওয়ার্কে বড় ধরনের ব্যাঘাতও সৃষ্টি করেছে। হামলাকারীরা জানায়, তারা সিআর কাস্টিং/এক্সাক্ট-এর পুরো শিল্প অবকাঠামোতে ঢুকে পুরো ডেটা সিস্টেম ভেঙে ফেলেছে। এটি তাদের বৃহৎ কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ, যার উদ্দেশ্য হলো ইসরায়েলের সামরিক সক্ষমতার ভিত্তিকে দুর্বল করা।
সাইবার গোষ্ঠীটি এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তিভিত্তিক সরবরাহকারী বেন সিমন অ্যালুমিনিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজেও হামলা চালিয়েছিল। তারা দাবি করে, সেসময় প্রতিষ্ঠানটির সব অপারেশনাল সিস্টেম অচল করে দেওয়া হয়েছিল এবং গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্য সংগ্রহ করে তা প্রতিরোধ আন্দোলনের ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সাম্প্রতিক অতীতে ইসরায়েলের অন্যতম প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি নির্মাতা রাফায়েল সিস্টেমেও সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলার ফলে ইসরায়েলের চলমান প্রযুক্তিগত কার্যক্রমে বড় ধরনের বিভ্রাট ঘটে বলে দাবি করা হয়।
