সৌদি আরবে কারাবন্দি অন্তত ৫০ জন আফ্রিকান নাগরিকের যেকোনো সময় শিরশ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতে পারে। এদের বেশিরভাগই ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার নাগরিক।
সৌদি কর্তৃপক্ষের দাবি, এরা সবাই মাদক চোরাচালানের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত।
আটকদের স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, যেকোনো মুহূর্তে দণ্ড কার্যকর শুরু হতে পারে। অবশ্য একজন জানান, শিরশ্ছেদের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
এই বন্দিরা সৌদি আরবের ইয়েমেন সীমান্তবর্তী অঞ্চলের নাজিরান কারাগারে বন্দি। কারাগারে থাকা কয়েকজন জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহ আগে তাদের জানানো হয় ঈদুল আজহার পরপরই দণ্ড কার্যকর হবে। সৌদি আরবে সাধারণত শিরশ্ছেদের মাধ্যমেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
একজন বন্দি, যিনি নিজের পরিচয় গোপন রাখার শর্তে মিডল ইস্ট আইকে কথা বলেন, ‘তারা আমাদের শেষ বিদায় জানাতে বলেছে। ঈদের পরেই আমাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে, এ কথা আগেই বলা হয়েছিল। এখন তা শুরু হয়ে গেছে।’
মিডল ইস্ট আই যে তালিকা পেয়েছে, তাতে দেখা গেছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ৪৩ জন ইথিওপিয়ান এবং ১৩ জন সোমালিয়ান নাগরিক। এই তালিকায় অন্তত ছয়জনকে গত ছয় মাসের মধ্যে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনেকেই বহু বছর ধরে বন্দি এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ দাবি করেছেন যে, তারা কখনোই মাদক পাচারে জড়িত ছিলেন না।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে সৌদি আরবে মাদক সংশ্লিষ্ট অভিযোগে অন্তত ৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
২০২৪ সালে সৌদি আরবে মোট ৩০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল, যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো সৌদি সরকারের এই দণ্ডনীতি ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন তুলে আসছে, বিশেষ করে যেখানে বিদেশি শ্রমিকরা অবিচারের শিকার হন বলেও অভিযোগ রয়েছে।