গাজায় দুর্ভিক্ষ ও মানবিক সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে ‘ইসরায়েল’ নিজেকে দায়মুক্ত প্রমাণের চেষ্টা করছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ইসরায়েল’ সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার দাবি করেন, “আজ গাজায় যে খাদ্য ঘাটতি চলছে, এজন্য ‘ইসরায়েল’ দায়ী নয়। এটা হামাসের তৈরি এক মানবসৃষ্ট সংকট।”
তিনি আরও বলেন, “গাজায় ‘ইসরায়েলের’ কারণে কোনো দুর্ভিক্ষ নেই। দুর্ভিক্ষ যা আছে, তা হামাসের কারণে। তবে প্রায়শই পুরো সত্যটা বলা হয় না।”
এ বক্তব্য আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর অবস্থানের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। ১০০টিরও বেশি মানবিক সংস্থা ‘ইসরায়েলের’ প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা গাজায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করে।
 
অক্সফামের একজন পরিচালক সিএনএন’কে বলেন, ‘ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে সাহায্যের প্রবাহ সীমিত করছে’। তিনি সতর্ক করেন, ‘সম্পূর্ণ দুর্ভিক্ষ এখন আর সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
তবে মেনসার এসব দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘এসব হচ্ছে ভিত্তিহীন ভয় দেখানো। বাস্তবতার সঙ্গে এসব সতর্কবার্তার কোনো মিল নেই।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ‘ইসরায়েল’-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) দাবি করেছে, হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠী জাতিসংঘের সরবরাহকৃত ত্রাণ লুট করছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, জিএইচএফ যখন মে মাসের শেষ দিকে গাজায় কার্যক্রম শুরু করে, তখন থেকে অন্তত এক হাজার ফিলিস্তিনি সাহায্য নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। যদিও জিএইচএফ এই সংখ্যা ‘মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত’ বলে দাবি করেছে এবং এটিকে ‘হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য’ বলে অবজ্ঞা করেছে।
তবে জাতিসংঘ ও মার্কিন কর্মকর্তারা পূর্বেও গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানকে সাধারণত বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
এদিকে গাজার খাদ্য বাজারগুলো এখন প্রায় ফাঁকা। রাস্তায় জমছে ময়লা-আবর্জনা। ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগ। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে বহু মানুষ পথেই লুটিয়ে পড়ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরে আজ বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে ১০০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ‘ইসরায়েল’কে গাজার উপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
তারা সতর্ক করেছে, অবরোধ চলতে থাকলে গাজায় পুরোপুরি দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে পারে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে এখন আর মানবিক সহায়তা যথেষ্ট নয় বাঁচতে হলে প্রয়োজন পুরোপুরি অবরোধ তুলে দেওয়া এবং নিরাপদ ও পূর্ণাঙ্গ ত্রাণ প্রবাহ নিশ্চিত করা।
তবে ‘ইসরায়েল’ দাবি করেছে, তারা গাজায় ‘প্রচুর পরিমাণে’ ত্রাণ সরবরাহ করছে। পাশাপাশি তারা আগের মতোই দায় চাপিয়েছে হামাসের উপর। ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস ত্রাণ সহায়তা চুরি করছে এবং তা বিক্রি করে লাভ করছে।
হামাস এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

 
                             
                                    


 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন