রাজধানীসহ সারাদেশের কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্যের দামে এসেছে কিছুটা স্বস্তি। কয়েক সপ্তাহ আগেও যেখানে কেজিপ্রতি ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যেত না, এখন সেই বাজারেই দাম কমেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। আগাম শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় বাজার এখন বেশ জমজমাট। ফলে ক্রেতাদের মুখে কিছুটা স্বস্তির হাসি ফুটেছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির পাশাপাশি ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামও কিছুটা কমেছে। তবে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ও মাংসের বাজার এখনও চড়া দামে রয়েছে।
বাজারে এখন বিভিন্ন শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। ফলে দামও দ্রুত কমছে। বর্তমানে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, যা দুই সপ্তাহ আগেও ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়, মুলা ৪০-৬০ টাকায়, আর আলু ২০ টাকা কেজিতে।
এছাড়া কাঁচা পেঁপে ও কচুর মুখি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন, করলা, বরবটি ও কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। কাঁচা মরিচের দামও কিছুটা কমে এসেছে এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, যদিও পাড়া-মহল্লার দোকানে তা এখনও কিছুটা বেশি।
রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা সুজন মোহাম্মদ বলেন, এখন সবজির সরবরাহ প্রচুর। ক্রেতাদেরও ভিড় বেড়েছে। গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাজার আরও স্থিতিশীল হবে।
সবজির দাম কমার প্রভাব পড়েছে ডিম ও মুরগির বাজারেও। দুই সপ্তাহ আগেও ডিমের ডজনপ্রতি দাম ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। এখন বড় বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লার ছোট দোকানগুলোতে এখনো ডিমের দাম ১৪০ টাকা ডজন।
ব্রয়লার মুরগির দামও কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। আগে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা থাকলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। তবে সোনালি জাতের মুরগির দাম আগের মতোই ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একই সময়ে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায়, যা আগের সপ্তাহের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে।
২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বাজারে ইলিশের সরবরাহ শুরু হয়েছে পাঁচ দিন আগে। তবে দাম এখনো সাধারণের নাগালের বাইরে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ৩০০-৪০০ গ্রামের ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। আর ৮০০ গ্রাম বা তার বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজিতে।
বিক্রেতারা বলছেন, ‘নিষেধাজ্ঞার পর সরবরাহ শুরু হলেও এখনো পর্যাপ্ত ইলিশ আসেনি। জেলেরা পুরোপুরি কাজে ফিরলে দাম আরও কিছুটা কমবে।’
দেশি পেঁয়াজের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। রসুনের দামও তুলনামূলক স্থিতিশীল দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকায়।
দেশি মসুর ডালের দাম অপরিবর্তিত থেকে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আমদানি করা ডালের দাম কিছুটা কমে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকায় এসেছে। চিনির বাজারেও ভালো খবর আছে, প্রতি কেজি চিনি এখন ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
ভোজ্যতেলের বাজারে তেমন পরিবর্তন হয়নি। সয়াবিন তেল বোতলজাত ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা, আর খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, শীতের আগাম সবজির সরবরাহ অব্যাহত থাকলে নিত্যপণ্যের বাজারে স্থিতিশীলতা আরও বাড়বে। এতে মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা কমে ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই আরও নতুন শীতকালীন সবজি বাজারে উঠবে। এতে দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251031164129.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন