বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ১১:১৭ পিএম

যেভাবে বদলে গেল আমিরাতি বোরকার পরিচয়

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ১১:১৭ পিএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ‘বোরকা’ শব্দটি শুনলে আমাদের চোখে যে পূর্ণাঙ্গ আবৃত পোশাকের ছবিটি ভাসে, এখানকার ঐতিহ্যবাহী বোরকা তার থেকে অনেকটাই আলাদা। এটি মূলত এক ধরনের নকশা করা, শক্ত কাপড়ের মুখোশ যা নাক, ভ্রু এবং কখনও কখনও মুখের কিছু অংশ ঢেকে রাখে। কিন্তু চোখ দুটি খোলা থাকে।

একসময় এটি ছিল আমিরাতি নারীদের দৈনন্দিন পোশাকের অবিচ্ছেদ্য অংশ অর্থাৎ তাদের সৌন্দর্য, শালীনতা, সামাজিক মর্যাদা এবং মরুভূমির রুক্ষ আবহাওয়া থেকে সুরক্ষার এক অনন্য প্রতীক। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই ঐতিহ্য এখন ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রবীণদের কাছে এটি এখন সোনালি অতীতের স্মৃতি, আর তরুণ প্রজন্মের কাছে হয়ে উঠেছে সংস্কৃতির এক ঝলমলে প্রতীক।

ভিজ্যুয়াল শিল্পী কারিমা আল শোমেলির মতে, এই বোরকা কোনো ধর্মীয় পোশাক নয়, বরং আমিরাতি ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অতীতে এর নকশা ও রঙ দেখে নারীর বয়স ও সামাজিক অবস্থান বোঝা যেত। যেমন, কিশোরী মেয়েরা পরত গাঢ় লাল বা কালো রঙের বোরকা, নববধূদের জন্য থাকতো সোনালি আভাযুক্ত বিশেষ বোরকা, আর বয়স্ক নারীরা ব্যবহার করতেন তুলনামূলক ছোট চোখের ফাঁকওয়ালা ডিজাইন। এমনকি মরুভূমির উপজাতিরা তীব্র সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচাতে সাত বছরের শিশুদেরও বড় আকারের বোরকা পরিয়ে রাখত।

বিবাহিত-অবিবাহিত আরব নারীদের বোরকায় কেন ভিন্নতা থাকে, রহস্যের উম্মোচন করলেন শিল্পী 

৭০ বছর বয়সী জাফরানা আহমেদ খামিস বিয়ের পর থেকে একটানা ৪৬ বছর ধরে এই বোরকা পরে আসছেন। তিনি তার সময়ের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘অতীতে এর ব্যবহারের স্পষ্ট নিয়ম ছিল। অবিবাহিত মেয়েরা এমন বড় আকারের বোরকা পরত যা প্রায় পুরো মুখ ঢেকে রাখত, আর বিবাহিত নারীরা ছোট আকারের এবং বড় চোখের ফাঁকওয়ালা ডিজাইন পরার সুযোগ পেত।’

এই ঐতিহ্য এখন কীভাবে বদলে গেছে, তা ফুটে ওঠে ৬৫ বছর বয়সী আইশা আলি আল-ব্লোশির কথায়। তিনি বলেন, ‘এখনকার বোরকাগুলোতে এমব্রয়ডারি, নীল রঙ বা সোনালি প্রলেপের কাজ দেখা যায়। এগুলো মূলত জাতীয় দিবস বা বিয়ের অনুষ্ঠানের মতো বিশেষ উৎসবে পরা হয়। এটি আর দৈনন্দিন জীবনের অংশ নেই।’ তার মতে, ভবিষ্যতে এটি কেবল একটি আনুষ্ঠানিক বা ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবেই টিকে থাকবে।

৮০ বছরের মরিয়ম সেলেম মনে করেন, তার সময়ে বোরকা ছিল নারীত্বের বা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার প্রতীক। তিনি প্রথম এটি পরেছিলেন নিজের বিয়ের রাতে, কারণ তখন অবিবাহিত মেয়েদের মুখ ঢাকার পোশাক পরার প্রচলন ছিল না। তিনি নীল রঙের কাপড় কিনে নিজ হাতে বোকরা তৈরি করতেন এবং বিক্রিও করতেন।

আজকের তরুণ প্রজন্ম যেখানে হিজাব, নিকাব বা গাশওয়াকে বেছে নিচ্ছে, সেখানে জাফরানা, ব্লোশি ও মরিয়মদের মতো নারীরা আজও এই ঐতিহ্যকে পরম মমতায় লালন করে চলেছেন। তাদের হাত ধরেই এই বোরকা হয়তো আর দৈনন্দিন জীবনের অংশ নয়, তবে এটি আজও আমিরাতি নারীর আত্মপরিচয় ও দৃঢ়তার এক জীবন্ত গল্প বলে চলেছে।

সূত্র: খালিজ টাইমস

Shera Lather
Link copied!