পারমাণবিক কার্যক্রম ও স্থাপনা ইস্যুতে টানা ১২ দিনের যুদ্ধে জড়ায় ইরান ও ‘ইসরায়েল’। সেসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় দখলদার ‘ইসরায়েল’। তবে এবার জানা গেল ওই সময়ে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তিন ‘ইসরায়েলি’ নিহতের খবর।
‘ইসরায়েলি’ গণমাধ্যম ‘ইসরায়েল হায়োম’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৭ জুন ভোরে একটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ‘ইসরায়েল’-এর হাইফা শহরের বাজান তেল শোধনাগারে আঘাত হানে। শোধনাগারের ভেতরের একটি অভ্যন্তরীণ কক্ষে অবস্থানরত তিনজন ধ্বংসস্তূপ ও আগুনে আটকা পড়ে প্রাণ হারান।
হিব্রু দৈনিকটির প্রতিবেদন অনুসারে, এই হামলায় তেল শোধনাগার ছাড়াও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে পুরো স্থাপনাটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
বাজান গ্রুপ তেলআবিব স্টক এক্সচেঞ্জে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে জানায়, সুবিধাগুলো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং আগামী মাসগুলোতে ধীরে ধীরে আবার চালু হবে।
কোম্পানিটি অনুমান করেছে যে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের ১৫০ থেকে ২০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
এর আগে, ১৩ জুন ‘ইসরায়েল’ ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন যুদ্ধ শুরু করে এবং টানা ১২ দিন তেহরানের সামরিক, পারমাণবিক ও আবাসিক এলাকাগুলোতে হামলা চালায়।
পরে ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের নাতানজ, ফোর্দো ও ইস্ফাহানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সামরিক আক্রমণ চালায়। এসব হামলার জবাবে ইরানি সামরিক বাহিনী শক্তিশালী পাল্টা আক্রমণ চালায়।
ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) অ্যারোস্পেস ফোর্স ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ অভিযানের অংশ হিসেবে ‘ইসরায়েলি’ ভূখণ্ডে ২২টি প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যাতে বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
একইসঙ্গে মার্কিন হামলার জবাবে ইরানি সশস্ত্র বাহিনী কাতারের আল-উদেইদ বিমানঘাঁটিতে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। পশ্চিম এশিয়ার বৃহত্তম মার্কিন সামরিক ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই ঘাঁটি তখন সরাসরি হামলার মুখে পড়ে।
অবশেষে, ২৪ জুন একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে এই ১২ দিনের ভয়াবহ সংঘাতের অবসান ঘটে।
সূত্র: মেহের নিউজ