গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানে দুই লাখের বেশি ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাবেক চিফ অব স্টাফ হারজি হালেভি। তিনি মার্চে সেনাপ্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান, এর আগে গাজায় অভিযানের প্রথম ১৭ মাস তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
দক্ষিণ ইসরায়েলের এইন হাসোর এলাকার বাসিন্দাদের উদ্দেশে এক বক্তব্যে হালেভি বলেন, ‘গাজার ২২ লাখ জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও বেশি মানুষ নিহত বা আহত হয়েছে, যা হিসাব করলে দুই লাখেরও বেশি দাঁড়ায়।’
এটি কোনো ছোটখাটো যুদ্ধ নয় উল্লেখ করে তিনি ইঙ্গিত দেন, হামাসের ২০২৩ সালের অক্টোবরের হামলার আগেই ইসরায়েলকে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল।
হালেভির দেওয়া পরিসংখ্যান ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংখ্যার কাছাকাছি, যদিও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ প্রায়ই সেই তথ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। বর্তমানে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৭৫৬ জন নিহত এবং ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৫৯ জন আহত হয়েছে। যদিও ইসরায়েলি অভিযানের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কারণে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকেরই আটকে থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
হালেভি সামরিক আইনজীবীদের ভূমিকা নিয়েও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘কেউ কখনো আমাকে থামায়নি। সামরিক অ্যাডভোকেট জেনারেলেরও (ইয়িফাত তোমার-ইয়েরুশালমি) আমাকে থামানোর ক্ষমতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘আইনি পরামর্শ বাস্তবে অপারেশনাল সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেনি। বরং আইনি উপদেষ্টারা আন্তর্জাতিক মহলে সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডকে সাফাই দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছেন।’
মানবাধিকার আইনজীবী মাইকেল স্ফার্ড মন্তব্য করেন, হালেভির বক্তব্য প্রমাণ করে যে সামরিক আইনি উপদেষ্টারা কেবল ‘রাবার স্ট্যাম্প’ হিসেবে কাজ করেন। হালেভির উত্তরসূরি আইডিএফ প্রধান এয়াল জামিরও গাজা শহরের বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আইনি পরামর্শ উপেক্ষা করেছেন বলে হারেৎজের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখনো হালেভির মন্তব্য বা গাজায় হতাহতের সংখ্যার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন