জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের প্রাক্কালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান সম্মেলনে মাল্টা, অ্যান্ডোরা, মোনাকো এবং লুক্সেমবার্গও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
এই ঘোষণার পর উপস্থিত প্রতিনিধিরা করতালিতে স্বাগত জানান এবং এটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক গতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হয়। সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
মাল্টার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট অ্যাবেলা বলেন, ‘এই স্বীকৃতি আমাদের শান্তি ও ন্যায়বিচারের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস এবং ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের প্রতিফলন।’
লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী লুক ফ্রিডেন এটিকে ‘ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত’ বলে উল্লেখ করেন।
এর আগে একই সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আমি ঘোষণা করছি যে, আজ থেকে ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। এটি একমাত্র সমাধান যা ইসরায়েলকে শান্তিতে বাঁচতে দেবে।’
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রেক্ষাপটে সিদ্ধান্তটিকে জরুরি বলে উল্লেখ করে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘সময় এসেছে যুদ্ধ থামানোর, গাজায় বোমাবর্ষণ ও গণহত্যা বন্ধ করার এবং মানুষকে উদ্বাস্তু হওয়া থেকে রক্ষা করার। চলমান যুদ্ধের কোনো ন্যায্যতা নেই।’
ম্যাক্রোঁ সম্প্রতি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানান, যার মধ্যে রয়েছে অ্যান্ডোরা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, মোনাকো, পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য এবং সান মারিনো।
তিনি বলেন, এই স্বীকৃতি ‘গঠনমূলক আলোচনার পথ সুগম করবে’ এবং আরব ও মুসলিম দেশগুলোকে আহ্বান জানান যে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর তারা যেন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে।
ম্যাক্রোঁ আরও জানান, গাজায় আটক সব জিম্মি মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ফ্রান্স ফিলিস্তিনে দূতাবাস খুলতে পারে। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা মিশনে অবদান রাখার জন্য প্যারিস প্রস্তুত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল অংশ নেয়নি। তবে অনুষ্ঠানটি কূটনৈতিকভাবে ফিলিস্তিনিদের জন্য বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জাতিসংঘ সদর দপ্তর থেকে আলজাজিরার বাবর উমর বলেন, ‘সম্মেলনটি শেষে ফ্রান্সসহ একাধিক দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়, যা ফিলিস্তিনিদের জন্য কূটনৈতিক সাফল্য বয়ে এনেছে। বিশ্বের অন্যান্য নেতার সমর্থনমূলক বক্তব্যও বাড়তি গুরুত্ব যোগ করেছে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন