দুই বছরের ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের পর গাজার কিছু এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে ইসরাইল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিন ধাপে এই প্রত্যাহার সম্পন্ন হবে। যদিও গাজার অর্ধেকের বেশি এলাকা এখনো ইসরাইলি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর হাজারো ফিলিস্তিনি ধ্বংসস্তূপে পরিণত নিজেদের বাড়ি দেখতে গাজা সিটির দিকে রওনা দেন। প্রায় ২২ লাখ গাজাবাসীর অধিকাংশই ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে স্থানচ্যুত হয়ে আছেন।
রাস্তায় ফিরে কেউ কাঁদছেন, কেউ আনন্দে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি দিচ্ছেন। খান ইউনিসের ইব্রাহিম আল-হেলু বলেন, ‘আমি আবেগাপ্লুত হলেও সতর্ক ছিলাম। এখন আমরা সবাই বাড়ি ফিরে পরিস্থিতি দেখতে যাচ্ছি।’
ইসরাইলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, সেনারা গাজার উত্তর-পশ্চিম প্রান্ত থেকে সরে গেছে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, সেনা প্রত্যাহার শেষে গাজার প্রায় ৫৩ শতাংশ এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ‘একটি নির্ধারিত সীমারেখা পর্যন্ত সেনা প্রত্যাহার করা হবে।’
গাজা ও তেল আবিবে যুদ্ধবিরতির খবরে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। কেউ বাঁশি বাজাচ্ছেন, কেউ হাততালি দিচ্ছেন— কেউ আবার হারানো স্বজনদের স্মরণে কাঁদছেন। খান ইউনিসের আব্দুল মজিদ আব্দ রাব্বো বলেন, ‘রক্তপাত বন্ধে আল্লাহকে ধন্যবাদ। এই যুদ্ধবিরতিতে পুরো বিশ্ব খুশি।’
তবে ফিলিস্তিনিদের সামনে এখনো বড় চ্যালেঞ্জ— পুনর্গঠন ও বেঁচে থাকার সংগ্রাম। জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা পুনর্গঠনে আগামী ১০ বছরে লাগবে প্রায় ৫৩ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে তুরস্ক জানিয়েছে, তারা গাজার যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে গঠিত যৌথ টাস্ক ফোর্সে অংশ নেবে। প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান বলেছেন, ‘আমরা গাজার পুনর্গঠনেও অবদান রাখব।’ তিনি আরও জানান, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত তুরস্কের প্রচেষ্টা চলবে।
সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আল-জাজিরা।