ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত ত্রাণসংস্থা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ছয় সপ্তাহ আগে, ১০ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইতিমধ্যে তিনটি ত্রাণকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে সংস্থাটি।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে জিএইচএফ জানায়, জরুরি অবস্থায় চালু করা গাজায় ত্রাণ কার্যক্রমের সফল সমাপ্তি ঘোষণা করছে তারা। বিবৃতিতে গাজায় ৩০ লাখ প্যাকেজের মাধ্যমে ১৮৭ মিলিয়ন মিল বিতরণের তথ্য জানায় জিএইচএফ।
ছয়মাস আগে, গাজায় ইসরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধের সময় ত্রাণ প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হয় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা। এ সময় যুক্তরাষ্ট ও ইসরায়েলের সহায়তায় গাজায় ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করে জিএইচএফ। সংস্থাটির বিরুদ্ধে ত্রাণকার্যক্রমের আড়ালে শত শত ফিলিস্তিনিকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। ফলে জিএইচএফকে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন ত্রাণ সরবরাহকারী সংগঠন।
জাতিসংঘের মতে, জিএইচএফ-এর ত্রাণকেন্দ্রগুলোর কাছে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে খাদ্য খুঁজতে গিয়ে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই ইসরায়েলি গুলিতে। যদিও তেল আবিব জানিয়েছে, তাদের সৈন্যরা সতর্কতামূলক গুলি চালিয়েছে।
জিএইচএফের নির্বাহী পরিচালক জন অ্যাক্রি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য প্রতিষ্ঠিত মার্কিন নেতৃত্বাধীন বেসামরিক-সামরিক সমন্বয় কেন্দ্র (সিএমসিসি) জিএইচএফ-এর পরিচালিত মডেল গ্রহণ এবং সম্প্রসারণ করবে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হামাস জিএইচএফ বন্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে জিএইচএফের কার্যক্রমের জবাবদিহিতার কথা জানিয়েছেন হামাস সদস্য হাজেম কাসেম।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, ২৬ মে থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রের আশেপাশে খাবার খুঁজতে গিয়ে কমপক্ষে ৮৫৯ ফিলিস্তিনির মৃত্যু রেকর্ড করেছে সংস্থাটি। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য ত্রাণ কনভয়ের রুটের কাছে আরও ৫১৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। যাদের বেশিরভাগই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে।
জিএইচএফ জানিয়েছে, তাদের ত্রাণকেন্দ্রগুলিতে কোন ধরণের গুলি চালানো হয়নি । জাতিসংঘের বিরুদ্ধে গাজার হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর’ পরিসংখ্যান ব্যবহার করার অভিযোগ করছে সংস্থাটি।



