ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

গাজায় পপুলার ফোর্সেস’র নেতা ‘রাজাকার’ ইয়াসের আবু শাবাব নিহত

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৫, ০৮:৩২ এএম
ইয়াসের আবু শাবাব। ছবি- সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী পপুলার ফোর্সেস’র নেতা ইয়াসের আবু শাবাব নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ইয়াসের আবু শাবাবের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে পপুলার ফোর্সেস ও  ইসরায়েলের বিভিন্ন মিডিয়া। নিজেকে হামাসের শাসনবিরোধী দাবি করলেও ফিলিস্তিনজুড়ে আবু শাবাব ইসরায়েলের দোসর হিসেবে পরিচিত। তেল আবিবের সহায়তায় পপুলার ফোর্সেস নিজেকে গাজায় হামাসের বিকল্প হিসেবে তৈরি করছিল। 

গাজার বেদুইন তারাবিন উপজাতির এ সন্তান ২০২৩ সালে গাজা যুদ্ধের শুরুতেও উপত্যকাটিতে এত বেশি পরিচিত ছিলেন না। ২০২৩ সালে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে ইয়াসের আবু শাবাব জেল থেকে পালিয়ে যান। তিনি মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের কারণে কারাগারে বন্দি ছিলেন। এরপর  ‘এন্টি টেরর সার্ভিস’ র নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে পরিচয় দিতে থাকেন। এই ‘এন্টি টেরর সার্ভিস’ ই গাজায় পরবর্তীতে পপুলার ফোর্সেস হিসেবে পরিচিতি পায়।

আবু শাবাব গ্যাং গাজায় নিজেদের ‘ত্রাণের জিম্মাদার’ দাবি করলেও নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তাদের নেতা ইয়াসের আবু শাবাব নিজেই ত্রাণ লুটের কথা স্বীকার করেছেন। এই গ্যাংকে গাজায় অনেকে ‘জেইশ লাহাদ’ বলে—যা মূলত ১৯৭০-এর দশকে দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েল-সমর্থিত খ্রিষ্টান মিলিশিয়ার প্রতিচ্ছবি।

গত অক্টোবরে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি হওয়ার পর ইয়াসের আবু শাবাবকে হত্যা বা জীবিত গ্রেপ্তার করতে নিজ যোদ্ধাদের নির্দেশ দেয় হামাস। তার মৃত্যু হামাসের জন্য বেশ ভালো খবর।

গত জুনে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্বীকার করেন গাজায় হামাসবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে তারা অস্ত্র দিচ্ছেন। যার মধ্যে ইয়াসেরের পপুলার ফ্রন্ট ছিল। তবে হামাস বিরোধী সংগঠনকে অস্ত্র দেওয়ার নীতির বিস্তারিত জানায়নি ইসরায়েল।

যুদ্ধবিরতির পর গাজার রাফা অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে ইসরায়েল। ইয়াসের সেখানেই তার বাহিনী পরিচালনা করছিলেন।

যুদ্ধবিরতির পরও রাফা এখনো উত্তপ্ত রয়েছে। সেখানে প্রায় প্রতিদিনই গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। গত ১৮ নভেম্বর ইয়াসের তার ফাইটারদের ‘রাফা সন্ত্রাসী মুক্ত’ করার নির্দেশ দেন। মূলত হামাস যোদ্ধাদের সেখান থেকে নির্মূলের কথা বলেছিলেন তিনি।

রাফার বিভিন্ন সুড়ঙ্গে ১০০ থেকে ২০০ হামাস যোদ্ধা আটকা পড়ে আছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে ইসরায়েল হত্যা করেছে।

ইসরায়েলি আর্মি রেডিও জানিয়েছে, ইয়াসের আবু শাবাব আহত অবস্থায় দক্ষিণ ইসরায়েলের সোরোকা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ তথ্য অস্বীকার করেছে। ইসরায়েলি এ দোসরের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে সেটি এখনো স্পষ্ট নয়।