অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে টানা বৃষ্টিপাতের পর সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি এখন স্পষ্ট হচ্ছে। এই দুর্যোগে প্রাণহানি হয়েছে ৫ জনের, আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ১০ হাজার ঘরবাড়ি।
শনিবার (২৪ মে) প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেন, বন্যার পর উদ্ধার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হয়েছে। এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘মানুষ যাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়, তা নিশ্চিত করতে আমরা ফেডারেল, রাজ্য ও স্থানীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি।’
রয়টার্স লিখেছে, নিউ সাউথ ওয়েলসের মধ্য-উত্তর উপকূলীয় এলাকায়, যেখানে বন্যার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ছিল, সেখানকার শহরগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, গবাদিপশু ভেসে যায়, অনেক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।
জরুরি সেবা সংস্থাগুলোর প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, অন্তত ১০ হাজার স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যের জরুরি সেবা কমিশনার মাইক ওয়াসিং জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
তবু শত শত মানুষ এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন এবং শুক্রবার রাতেই ৫২টি উদ্ধার অভিযান চালাতে হয়েছে। বন্যায় সর্বশেষ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে মানিং নদীর তীরে অবস্থিত তারে শহরের কাছে।
পুলিশ জানায়, শহরটি থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে প্লাবিত একটি এলাকায় ৮০’র কোঠার বয়সের এক ব্যক্তির মরদেহ পাওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজ শুক্রবার তারে শহর সফরের পরিকল্পনা করলেও বন্যার কারণে তা বাতিল হয়। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘আরও প্রাণহানির খবর অত্যন্ত দুঃখজনক। এই সময়ে তার পরিবার ও তারে শহরের বাসিন্দাদের প্রতি আমাদের সমবেদনা।’
টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিতে নদীর পানি উপচে শহরগুলো ডুবে যায়, গাড়ি প্রায় উইন্ডশিল্ড পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায়, সড়কের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। একপর্যায়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বন্যার পানিতে আটকা পড়ে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়ায় চরম আবহাওয়া ধ্বংসাত্মক রূপ নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই এ প্রবণতা বাড়ছে। ২০১৯ সালের ভয়াবহ দাবানলের পর ২০২১ সাল থেকে নিয়মিত বন্যার কবলে পড়ছে দেশটি।
আপনার মতামত লিখুন :