টানা চতুর্থ দিনের মতো সম্পূর্ণ অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর। গত কয়েক দিনে সহিংস সংঘর্ষে তিন পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে জম্মু কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (জেএএসি), যা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও নাগরিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত। সংগঠনটি ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন শুরু করেছে, ফলে অঞ্চলজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য, যানবাহন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, যা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে এজএএসি।
আন্দোলনের সূচনা ২০২৩ সালে বিদ্যুতের বিল বৃদ্ধি ও ময়দার সংকট ঘিরে। পরে তা রূপ নেয় বিস্তৃত আন্দোলনে, যার মূল দাবি ৩৮ দফা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবি হলো শাসক শ্রেণির বিশেষ সুবিধা বাতিল (সরকারি গাড়ি, ভাতা, জ্বালানি ইত্যাদি)। শরণার্থীদের জন্য সংরক্ষিত ১২টি আসন বাতিল। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় উন্নতি, নতুন অবকাঠামো প্রকল্প, ট্যাক্স ছাড় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি। আগের আন্দোলনে গ্রেপ্তারকৃত কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার।
পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের অর্থমন্ত্রী আবদুল মজিদ খান বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে অধিকাংশ দাবি মানা হয়েছে। তবে দুটি ইস্যুতে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তা হলো শরণার্থী আসন বাতিল ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিশেষ সুবিধা কমানো।
অর্থমন্ত্রী আরও জানান, এখানে রাজস্ব আদায় অত্যন্ত কম; পাঁচ হাজারেরও কম করদাতা থাকায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফেডারেল সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের আলোচক দল পাঠিয়েছে মুজাফফরাবাদে। বৃহস্পতিবারের বৈঠক সমাধান ছাড়া শেষ হলেও শুক্রবার আবার আলোচনা হবে।
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে বিতর্কিত কাশ্মীর অঞ্চল স্বাধীনতার পর থেকেই উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ বাস করেন, যারা একটি আংশিক স্বায়ত্তশাসিত ব্যবস্থার অধীনে নিজেদের সরকার ও আইনসভা পরিচালনা করে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন