পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে দেশটির চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস বা প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর তার মেয়াদ নতুন করে গণনা করা হবে। এর ফলে তিন বাহিনীর প্রধান হিসেবে তার মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ছে।
বিতর্কিত ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনীতে দেশটির প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি স্বাক্ষর করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সরকার এই সংশোধনী বিলগুলো সংসদে তোলে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস করায়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জাতীয় পরিষদে পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্ট (সংশোধনী) বিল–২০২৫, পাকিস্তান এয়ার ফোর্স (সংশোধনী) বিল–২০২৫ ও পাকিস্তান নেভি (সংশোধনী) বিল–২০২৫ উপস্থাপন করেন এবং এগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস হয়।
আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার জানিয়েছেন, আর্মি অ্যাক্টে পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হলো চিফ অব আর্মি স্টাফ (সিওএএস) বা সেনাপ্রধানকে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেবে মনোনীত করা এবং চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি (সিজেসিএসসি) পদ বিলোপ করা। নতুন কাঠামোয় সিডিএফ–এর মেয়াদ হবে নিয়োগের তারিখ থেকে পাঁচ বছর।
সংশোধনীতে আরও বলা হয়েছে যে, নতুনভাবে সিডিএফ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার দিন থেকেই বর্তমান সেনাপ্রধানের মেয়াদ পুনরায় শুরু হবে। জেনারেল আসিম মুনির সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর, এবং তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৭তম সেনাপ্রধান। চলতি বছরের মে মাসে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের পর তাকে পাঁচ তারকা জেনারেল অর্থাৎ ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করা হয়।
এর আগে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার ছয়টি বিল পাস করে, যার মধ্যে তিনটি ছিল সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত, যা বিরোধীদের ব্যাপক প্রতিবাদের মধ্যেই পাস হয়েছিল। ওই বিলগুলোর মূল বিষয়বস্তু ছিল, তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন বছরের বদলে পাঁচ বছর করা।
জেনারেল, এয়ার চিফ মার্শাল ও অ্যাডমিরালদের জন্য নির্ধারিত অবসরের বয়সসীমা ৬৪ বছর এই তিন শীর্ষ পদে প্রযোজ্য হবে না এবং পুনরায় নিয়োগ বা মেয়াদ বৃদ্ধিও পাঁচ বছরের ভিত্তিতে হবে। তবে সিজেসিএসসি’র মেয়াদ তখনো তিন বছরই রাখা হয়।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ খান বলেছিলেন, সেনাপ্রধানের মেয়াদ ২০২৭ সালে শেষ হবে এবং তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তাকে মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না।

