ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্রপন্থি ও বিরোধী দলীয় নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে ২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। নোবেল পাওয়ায় বেশ অবাক হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বার্তাসংস্থা এএফপিকে পাঠানো মারিয়ার প্রেস টিমের একটি ভিডিও দেখা যাচ্ছে, নোবেল জয়ের পর ভেনেজুয়েলার আরেক বিরোধী দলীয় নেতা এডমুন্ডো গঞ্জালেজ উরুতিয়া তাকে ফোন করেন। ওই ফোনেই নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মারিয়া। উরুতিয়াকে বলেন, ‘আমি তো অবাক।’ জবাবে গঞ্জালেজ বলেন, ‘আমরাও অবাক এবং আনন্দিত।’ এরপর ৫৮ বছর বয়সি মারিয়া বলেন, ‘এটি কীভাবে হলো, আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।’
ভেনেজুয়েলার সরকারের রোষানলের কারণে লুকিয়ে আছেন মারিয়া। এ কারণে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারেননি তিনি। ভেনেজুয়েলার সাধারণ মানুষকে গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে উদ্বুদ্ধ করা এবং দেশটিকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে একনায়কতন্ত্র থেকে গণতান্ত্রিক পথে নেওয়ার আন্দোলনের জন্য তাকে নোবেল দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নোবেল কমিটি।
নোবেল কমিটি বলেছে, ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্র আন্দোলনের নেত্রী মারিয়া কোরিনা লাতিন আমেরিকার ইতিহাসে সাহসিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। গভীর বিভাজনে জর্জরিত দেশটির বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি। মুক্ত ও অবাধ নির্বাচন এবং জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকারের দাবিতেই সকল বিরোধী শক্তি তার নেতৃত্বে এক কাতারে শামিল হয়েছিল।
ভেনেজুয়েলা একসময় তুলনামূলকভাবে গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল দেশ ছিল। কিন্তু দেশটি এখন এক নির্মম, স্বৈরাচারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, যা এক ভয়াবহ মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটে ডুবে আছে। হাতেগোনা কিছু সুবিধাভোগী নিজেদের আখের গোছালেও ভেনেজুয়েলার বেশিরভাগ মানুষ চরম দারিদ্র্যের শিকার। রাষ্ট্র তার হিংস্র দমন-পীড়ন ব্যবহার করছে দেশের সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধেই। এ কারণে প্রায় ৮০ লাখ ভেনেজুয়েলান নিজ দেশ ছেড়েছেন। নির্বাচন কারচুপি, মিথ্যে মামলা আর কারাদণ্ডের মাধ্যমে বিরোধী পক্ষকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে।