ঢাকা শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫

আবারও ক্যারিবিয়ান সাগরে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ৩

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০৯:৩৯ পিএম
হামলার ছবি। -সংগৃহীত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের আন্তর্জাতিক জলসীমায় একটি সন্দেহভাজন মাদকবাহী জাহাজে হামলা চালিয়ে তিন জনকে হত্যা করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

মার্কিন যুদ্ধমন্ত্রী পিট হেগসেথ এক্স-পোস্টে বলেছেন, জাহাজটি একটি 'নির্ধারিত সন্ত্রাসী সংগঠন'-এর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছিল। তবে এর কোনো প্রমাণ তিনি দেননি। পোস্টে ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ ছিল। সেখানে দেখা যায়, সাগরে একটি চলমান নৌকায় গোলাবারুদের আঘাতে বিশাল বিস্ফোরণ ঘটছে।

সেপ্টেম্বরের পর থেকে ভেনেজুয়েলার উপকূলে ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তথাকথিত মাদকবাহী জাহাজে হামলার ঘটনা বেড়েছে। এসব হামলায় সাম্প্রতিক সময়ে ৬০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন।

এদিকে, সম্প্রতি জাতিসংঘ যুক্তরাষ্ট্রকে এই অঞ্চলে তথাকথিত মাদক পাচারকারীদের জাহাজের ওপর হামলা বন্ধ করার এবং 'বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড' প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, এই মানুষদের 'এমন পরিস্থিতিতে হত্যা করা হয়েছে, যার কোনো যুক্তি আন্তর্জাতিক আইনে পাওয়া যায় না।'

নিহতের পরিবারের সদস্য এবং ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই জেলে ছিলেন। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে।

ভলকার তুর্ক বলেন, 'এই আক্রমণগুলো অগ্রহণযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই এই ধরনের আক্রমণ বন্ধ করতে হবে এবং এই নৌকাগুলোতে থাকা মানুষদের বিচারবহির্ভূত হত্যা রোধে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে হবে - তাদের বিরুদ্ধে যে অপরাধমূলক কাজের অভিযোগই থাকুক না কেন।'

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসন কংগ্রেসে পাঠানো এক নোটিশে বলেছে, লাতিন আমেরিকার মাদক কার্টেলগুলোর সঙ্গে তাদের দেশ 'সশস্ত্র সংঘাতে' লিপ্ত। এই হামলার ন্যায্যতা প্রমাণের অংশ হিসেবে ভুক্তভোগীদের 'সন্ত্রাসী গোষ্ঠী' হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

ট্রাম্পের ঘোষণার পর এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়ছে। তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএ অভিযানের অনুমোদনও দিয়েছেন এবং কথিত মাদক কার্টেলের বিরুদ্ধে দেশটিতে স্থল আক্রমণের কথা বিবেচনা করছেন।

ভলকার তুর্ক বলেন, 'আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীনে, জীবনের জন্য আসন্ন হুমকি সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেবলমাত্র শেষ অবলম্বন হিসাবে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রাণঘাতী শক্তির ব্যবহার অনুমোদিত।'

তিনি জোর দিয়ে বলেন, মার্কিন কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, হামলার শিকার নৌকাগুলোতে থাকা কোনো ব্যক্তিই অন্যদের জীবনের জন্য আসন্ন হুমকি বলে মনে হয়নি বা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তাদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী সশস্ত্র শক্তি ব্যবহারের ন্যায্যতার প্রমাণ মেলেনি। এই হামলার দ্রুত, স্বাধীন এবং স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া দরকার।