গাজায় ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত একটি সচেতনতামূলক মিছিলে আগুন ছুড়ে হামলা চালানো হয়েছে।একজন ব্যক্তি ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বলে চিৎকার করেন এবং একটি ফ্লেমথ্রোয়ার ব্যবহার করে হামলা চালান। এতে আটজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ ও এফবিআই।
ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ব্যক্তি কলোরাডোর বাসিন্দা মোহামেদ সাবরি সোলিমানকে (৪৫) ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডেনভারে এফবিআই এর বিশেষ এজেন্ট মার্ক মিচালেক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘হামলাটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে।’
এনবিসি এর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আহতদের মধ্যে চারজন পুরুষ এবং চারজন নারী রয়েছেন। তাদের বয়স ৫২ থেকে ৮৮ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানানো হয়েছে।
হামলার সময় তারা ‘রান ফর দেয়ার লাইভস- বোল্ডার’ নামক একটি গোষ্ঠীর আয়োজনে একটি নিয়মিত অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছিলেন। তাদের লক্ষ্য- গাজায় হামাসের হাতে বন্দি থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির পক্ষে জনমত তৈরি করা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ জিম্মি হয়েছিলেন বলে ইসরায়েলি সূত্র জানায়। তাঁদের মধ্যে এখনও ২৩ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বোল্ডার পুলিশপ্রধান স্টিফেন রেডফার্ন জানান, অভিযুক্ত সোলিমান একজন মিশরীয় নাগরিক এবং তিনি একাই হামলা চালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তদন্তকারীরা বলছেন, হামলার আগে হামলাকারী একজন ল্যান্ডস্কেপার বা কর্মী সেজে ভিড়ের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি করেছেন।
গ্রেপ্তারের সময় সোলিমান নিজেও সামান্য আহত হন এবং তাকে হাসপাতালে নিতে হয়। পুলিশের ধারণা, হামলাকারীর উদ্দেশ্য বা মতাদর্শ এখনো স্পষ্ট নয় এবং তদন্ত চলছে।
এফবিআই ঘটনাস্থলে তদন্তে সহায়তা করছে এবং সংস্থাটির পরিচালক কাশ প্যাটেল এই হামলাকে ‘টার্গেটেড টেরর অ্যাটাক’ বলে অভিহিত করেছেন।
‘রান ফর দেয়ার লাইভস’ নামের সংগঠনটি জানায়, তারা শুধুমাত্র জিম্মিদের মুক্তির পক্ষে শান্তিপূর্ণ, অরাজনৈতিক আন্দোলনের জন্য কাজ করে এবং ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রাখে।
স্থানীয় বাসিন্দা ব্রুক কফম্যান বলেন, ‘দুপুরে পিয়ার্ল স্ট্রিটে হাঁটার সময় বিশৃঙ্খলা দেখতে পাই। তারপর দেখি একটা বড় আগুন জ্বলে উঠছে।
৯১১-এ কল করে আগুনের কাছে গিয়ে দেখি পোড়া পোশাক খুলে কয়েকজন নারী মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন, তাদের পা ঝলসে গেছে। কেউ চিৎকার করছেন, আর কারও মাথার চুল পুড়ে গেছে। একজন উলঙ্গপ্রায় পুরুষ কাচের বোতল হাতে চিৎকার করছিলেন।’
হামলার পর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি দুটি স্বচ্ছ বোতল হাতে চিৎকার করে ঘোরাঘুরি করছেন।
বোল্ডারের বিভিন্ন ইহুদি সংগঠন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ‘এ ধরনের ঘটনা আমাদের সম্প্রদায়ে যখন ঘটে, আমরা হতবাক হই। আমরা সবাই যেন একে অপরের পাশে দাঁড়াই।’
কলোরাডোর অ্যাটর্নি জেনারেল ফিল ওয়েইজার বলেন, হামলাটি ঘৃণামূলক অপরাধ (হেইট ক্রাইম) হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যেহেতু এটি একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর উপর পরিচালিত হয়েছে।
তার অফিস এই মামলার প্রসিকিউশনে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
সূত্র: এনবিসি নিউজ