এশিয়া মহাদেশের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে নতুন অঙ্ক তৈরি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মিত্র রাষ্ট্রগুলো এখন মার্কিন চাপে নিজ নিজ অবস্থান পুনর্বিবেচনা করছে। বিশেষ করে চীনকে ঠেকাতে ট্রাম্প এশিয়ার প্রতিটি সম্ভাব্য মিত্রকে বড় দায়িত্ব নিতে বাধ্য করছেন এবং প্রত্যেকের ওপরই বাড়তি প্রত্যাশার বোঝা চাপাচ্ছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে এক ধরনের ‘লেনদেন-ভিত্তিক’ পররাষ্ট্রনীতি চালু করছেন। যেখানে প্রতিটি মিত্র বা প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের মূল মূল্যায়ন হচ্ছে অর্থনৈতিক বা সামরিক স্বার্থের নিরিখে।
এমন বাস্তবতায় প্রশ্ন উঠছে কোন কোন দেশ ট্রাম্পের বিশেষ নজরে রয়েছে?
চীন
ট্রাম্প প্রশাসনের ‘চীন-নীতির’ কেন্দ্রে রয়েছে বাণিজ্য যুদ্ধ, প্রযুক্তি আধিপত্য এবং দক্ষিণ চীন সাগরের সামরিক উত্তেজনা। ট্রাম্প চীনের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে নতুন করে শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। একই সঙ্গে চীনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি নিরাপত্তা জোরদারের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন নৌবহরের উপস্থিতি আরও বাড়ানোর কথা বলেছেন ট্রাম্প।
জাপান
জাপান বহুদিনের মিত্র হলেও টোকিওর প্রতি প্রতিরক্ষা খরচ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন সামরিক ঘাঁটির জন্য জাপানের অর্থনৈতিক দায়ভার বাড়ানোর বিষয়টি আবারও সামনে এনেছে ওয়াশিংটন।
দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার ঘাঁটিগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ খরচের অধিকাংশ অংশ নিজস্বভাবে বহন করার জন্য সিউলের প্রতি চাপ তৈরি করেছেন ট্রাম্প। কিম জং উনের সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকলেও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার ভূ-রাজনৈতিক ভূমিকা আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
ভারত
চীনকে মোকাবিলায় ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে গুরুত্ব বেড়েছে ভারতের। চীনবিরোধী সামরিক জোটে ভারতের ভূমিকাকে আরও বড় করে দেখছেন ট্রাম্প।
ভিয়েতনাম
চীনের ‘চায়না প্লাস ওয়ান’ নীতির অংশ হিসেবে ট্রাম্পের ছকে উঠে আসছে ভিয়েতনাম। মার্কিন বিনিয়োগ এবং উৎপাদন স্থানান্তরের এক বড় ক্ষেত্র এখন ভিয়েতনাম। ইতিমধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির ইস্যু নিয়েও ভিয়েতনাম সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে ওয়াশিংটন।
ফিলিপাইন
চীন মোকাবিলায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধির অন্যতম ঘাঁটি হতে যাচ্ছে ফিলিপাইন। সম্প্রতি ফিলিপাইনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।