শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৫, ০৫:৪৬ পিএম

ইস্ফাহানে বাঙ্কার-বাস্টার বোমা ফেলেনি আমেরিকা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৫, ০৫:৪৬ পিএম

২২ জুন ইরানের ইস্ফাহান পারমাণবিক প্রযুক্তি গবেষণা কেন্দ্রের টানেলের প্রবেশপথের ক্ষতির একটি উপগ্রহ চিত্র দেখা যাচ্ছে। ছবি- সংগৃহীত

২২ জুন ইরানের ইস্ফাহান পারমাণবিক প্রযুক্তি গবেষণা কেন্দ্রের টানেলের প্রবেশপথের ক্ষতির একটি উপগ্রহ চিত্র দেখা যাচ্ছে। ছবি- সংগৃহীত

ইরানের বৃহত্তম পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে একটিতে বাঙ্কার-বাস্টার বোমা ব্যবহার করেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইস্ফাহানের পারমাণবিক গুদামে সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা ব্যবহার না করার কারণ প্রথমবারের মতো জানিয়েছেন জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন।

গত বৃহস্পতিবার এক গোপন ব্রিফিংয়ে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করেন বলে চারজন মার্কিন সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান।

শনিবার (২৮ জুন) মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানায়, ইস্ফাহানের ভূগর্ভস্থ গোপন স্থাপনায় ইরানের ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ আছে, যেটা পরবর্তীতে পারমাণবিক বোমা তৈরিতে ব্যবহার হতে পারে। কিন্তু ভূগর্ভস্থ স্থাপনাটি এতই গভীরে যে ওই পারমাণবিক স্থাপনায় ‘ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর’ বোমা ব্যবহার করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

সেখানে ইরানের অধিকাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম গোপনে সংরক্ষিত আছে বলেও ধারণা মার্কিনদের।

মার্কিন বি-২ বোমারু বিমান ইরানের ফোর্ডো এবং নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনায় এক ডজনেরও বেশি বাঙ্কার-বাস্টার বোমা ফেলেছিল। কিন্তু ইস্ফাহানে কেবল একটি মার্কিন সাবমেরিন থেকে ছোড়া টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছিল।

আইন প্রণেতাদের উদ্দেশ্যে গোপন ব্রিফিংটি পরিচালনা করেন কেইন, প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং সিআইএ পরিচালক জন র‍্যাটক্লিফ। কেইনের একজন মুখপাত্র মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, তিনি কংগ্রেসে চেয়ারম্যানের গোপন ব্রিফিং সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারবেন না।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, ব্রিফিংয়ের সময় র‍্যাটক্লিফ আইন প্রণেতাদের বলেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণা, ইরানের সমৃদ্ধ পারমাণবিক উপকরণের বেশিরভাগই ইস্ফাহান এবং ফোর্ডোতে সমাহিত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে ব্রিফিং গ্রহণের পর ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর ক্রিস মারফি সিএনএন-কে বলেন, ইরানের কিছু ক্ষমতা ‘এত দূরে যে আমরা কখনই তাদের কাছে পৌঁছাতে পারি না। তাই তাদের কাছে সংরক্ষিত অনেক জিনিসপত্র এমন এলাকায় স্থানান্তর করার ক্ষমতা রয়েছে যেখানে আমেরিকান বোমা হামলার ক্ষমতা নেই।’

সিএনএন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পরদিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার একটি প্রাথমিক মূল্যায়নে বলা হয়েছে, হামলাটি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূল উপাদানগুলোকে ধ্বংস করেনি, যার মধ্যে রয়েছে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়া। সম্ভবত প্রকল্পটি কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে। আক্রমণের আগে ইরান হয়তো কিছু সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম স্থাপনা থেকে সরিয়ে নিয়েছিল।

এই সপ্তাহে আইন প্রণেতাদের ব্রিফিংয়ে ট্রাম্পের কর্মকর্তারা ইরানের ইতোমধ্যে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ কোথায় তা নিয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার আবার দাবি করেছেন যে, মার্কিন সামরিক অভিযানের আগে তিনটি ইরানি স্থান থেকে কিছুই সরানো হয়নি।

কিন্তু বৃহস্পতিবার গোপন ব্রিফিং থেকে বেরিয়ে এসে রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা স্বীকার করেছেন যে, মার্কিন সামরিক হামলায় ইরানের সমস্ত পারমাণবিক উপকরণ ধ্বংস নাও হতে পারে। তবে তারা যুক্তি দিয়েছিলেন, এটি করা সামরিক বাহিনীর মিশনের অংশ নয়।

টেক্সাসের রিপাবলিকান মাইকেল ম্যাককল সিএনএন-কে বলেন, ‘যেসব স্থাপনা ঘুরে বেড়াচ্ছে সেখানে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম আছে, কিন্তু সেটা উদ্দেশ্য বা মিশন ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার বোধগম্যতা হলো এর বেশিরভাগই এখনও আছে। তাই আমাদের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রয়োজন। এজন্যই ইরানকে সরাসরি আমাদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে আসতে হবে, যাতে (আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা) সেখানে থাকা প্রতিটি আউন্স সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের হিসাব রাখতে পারে।’

মন্টেরির মিডলবেরি ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ থেকে পাওয়া প্ল্যানেট ল্যাবসের এই ছবিতে ২৭ জুন ইস্ফাহান নিউক্লিয়ার টেকনোলজি রিসার্চ সেন্টারকে দেখায়। ছবি- প্ল্যানেট ল্যাবস

রিপাবলিকান রিপ্রেজেন্টেটিভ গ্রেগ মারফি সিএনএন-কে বলেন, ‘এই মিশনের উদ্দেশ্য ছিল তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির কিছু নির্দিষ্ট দিক বাদ দেওয়া। সেগুলো বাদ দেওয়া হয়েছিল। পারমাণবিক পদার্থ অপসারণ করা মিশনের অংশ ছিল না।’

দক্ষিণ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, ‘আমরা এখানও বলে যাচ্ছি যে, এই তিনটি স্থানেই কার্যক্রম ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু তাদের এখনও উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে। আমি জানি না ৯০০ পাউন্ড উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কোথায় আছে। কিন্তু এগুলো লক্ষ্যবস্তুর অংশ ছিল না।’

গ্রাহাম আরও বলেন, ‘(জায়গাগুলো) ধ্বংস করা হয়েছে। কেউ শীঘ্রই এগুলো ব্যবহার করতে পারবে না।’

অস্ত্র বিশেষজ্ঞ এবং মিডলবেরি ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক জেফ্রি লুইস সিএনএন-কে বলেন, বাণিজ্যিক উপগ্রহ চিত্রগুলোতে দেখা গেছে, ইরানের কার্গো গাড়িগুলো ইস্ফাহানের টানেলগুলোতে প্রবেশ করেছে।

তিনি বলেন, ‘২৬ জুন ইস্ফাহানে মাঝারি সংখ্যক যানবাহন উপস্থিত ছিল এবং ২৭ জুন সকালের মধ্যে অন্তত একটি টানেলের প্রবেশপথ বাধামুক্ত করা হয়েছিল। ইরান প্রবেশপথগুলো সিল করার সময় যদি ইরানের (অত্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম) মজুদ এখনও টানেলের মধ্যেই থাকে, তাহলে এখন তা অন্য কোথাও থাকতে পারে।’

লুইসের মতে, প্ল্যানেট ল্যাবস কর্তৃক ২৭ জুন ধারণ করা অতিরিক্ত স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, সেই সময় টানেলের প্রবেশপথ খোলা ছিল।

সিএনএন জানিয়েছে, ডিআইএ’র প্রাথমিক মূল্যায়নে উল্লেখ করা হয়েছে, ভূ-উপরের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কাঠামো মাঝারি থেকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, এই ক্ষতির ফলে ইরানের জন্য ভূগর্ভস্থ থাকা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়তে পারে, যা বৃহস্পতিবার গ্রাহাম ইঙ্গিত করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার কেইন ও হেগসেথ বলেন, ফোর্ডোর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান ঠিক পরিকল্পনা অনুসারেই হয়েছে, কিন্তু ইস্ফাহান এবং নাতানজের উপর এর প্রভাবের কথা উল্লেখ করেননি।

Link copied!