মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৫, ১০:১৪ পিএম

মার্কিন নারীদের চাকরি ছাড়ার হিড়িক কেন?

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৫, ১০:১৪ পিএম

চলতি বছরের ৭ মাসেই সোয়া ২ লাখ নারী কর্মী চাকরি ছেড়েছেন। ছবি- ফোর্বস

চলতি বছরের ৭ মাসেই সোয়া ২ লাখ নারী কর্মী চাকরি ছেড়েছেন। ছবি- ফোর্বস

চলতি বছরের শুরু থেকে জুলাই পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০ বছর বা তার বেশি বয়সি প্রায় ২ লাখ ১২ হাজার নারী কর্মী চাকরি ছেড়েছেন। একই সময়ে নতুন করে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন মাত্র ৪৪ হাজার পুরুষ। মার্কিন শ্রমবাজারের তথ্যের এই চিত্রটা যখন বিপরীতমুখী তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, হঠাৎ কেন মার্কিন নারীরা চাকরি ছাড়ছেন।

সোমবার (৪ আগস্ট) বিখ্যাত টাইমস ম্যাগাজিন-এর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। পরবর্তীতে বিবিসির এক সাক্ষাৎকারেও একই তথ্য উঠে আসে।

কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও জনসাধারণ বিষয়ক সহযোগী অধ্যাপক মিস্টি লি হেগেনেস জানান, জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশু থাকা ২৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সি নারীদের শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ প্রায় তিন শতাংশ কমে ৬৯.৭ থেকে ৬৬.৯ শতাংশ হয়েছে। ২০২২, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে এই অংশগ্রহণ বাড়লেও ২০২৫ সালে নমনীয় কর্মনীতি প্রত্যাহারের কারণে এটি হ্রাস পেয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে ফেডারেল কর্মীদের সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিসে ফেরার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া অ্যামাজন, জেপি মরগান এবং এটিএন্ডটি সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিসে থাকার নীতিতে ফিরে এসেছে।

ট্রাম্পের শাসনামলে বেড়েছে নারীদের চাকরি ছাড়ার হিড়িক

ফরচুন ৫০০ কোম্পানিগুলোর মধ্যে পূর্ণ-সময়ের অফিসে থাকার প্রয়োজনীয়তা ২০২৫ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ২৪ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ২০২৪ সালের শেষের দিকে ১৩ শতাংশ ছিল। এই পরিবর্তন বিশেষ করে স্নাতক ডিগ্রিধারী নারীদের ওপর প্রভাব ফেলেছে, যাদের শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ ২০২৫ সালের জুলাইয়ে ৬৭.৭ শতাংশে নেমে গেছে।

ন্যাশনাল উইমেন্স ল’স সেন্টারের চাকরির মানবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক জুলি ভোগটম্যান বলেন, নমনীয়তা অদৃশ্য হওয়ার কারণে নারীর কর্মক্ষেত্র থেকে প্রস্থান একটি কাকতালীয় ঘটনা নয়। নারীরা এখনও যত্ন নেওয়ার দায়িত্বের সিংহভাগ বহন করেন, এবং চাকরি ধরে রাখার সময় এই দায়িত্ব পালনে পুরুষদের তুলনায় বেশি সমস্যা হয়। ফলে ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হলে তাদের কর্মক্ষেত্র ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

গবেষণায় দেখা গেছে, অফিসে ফেরার নীতি কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়ায়নি। মাইক্রোসফট, স্পেসএক্স এবং অ্যাপলের ওপর ২০২৪ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই নীতিগুলো সিনিয়র কর্মীদের চাকরি ত্যাগের দিকে পরিচালিত করেছে। আপওয়ার্ক এবং ওয়ার্কপ্লেস ইন্টেলিজেন্সের জরিপে দেখা গেছে, দুই-তৃতীয়াংশ সি-স্যুট নির্বাহী উল্লেখ করেছেন যে, কর্মক্ষেত্রে ফেরার নির্দেশনার কারণে ‘অনুপাতিক সংখ্যক’ নারী চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।

অর্থনৈতিক কারণে নিম্ন আয়ের নারীদের প্রভাব আরও গভীর হয়েছে। ২০২৫ সালে শিশু যত্নের জন্য ফেডারেল তহবিল উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাওয়ায় কিছু পরিবার বিকল্প ছাড়া পড়েছে। শিশু যত্ন প্রদানকারীদের প্রায় ২০ শতাংশ অভিবাসী, যার প্রভাব কর্মীদের আইনি মর্যাদা থাকা সত্ত্বেও অনুভূত হয়েছে। শিশু যত্নের খরচ বাড়ায় অনেক নারী বাড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।

চলতি বছরের ৭ মাসেই সোয়া ২ লাখ নারী কর্মী চাকরি ছেড়েছেন। ছবি- সংগৃহীত

ফেডারেল সরকারি কর্মীদের মধ্যে অনেকেই দূরবর্তী কাজের সুবিধা হারানোর কারণে শ্রমশক্তি থেকে বেরিয়েছেন। নারীরা কম বেতনের চাকরি গ্রহণের সময় নমনীয়তা ও দূরবর্তী কাজের সুবিধার ওপর নির্ভরশীল। যখন এই সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তারা অসামঞ্জস্যভাবে প্রভাবিত হয়েছে।

এতে পরিবারগুলোতে অর্থনৈতিক চাপ বেড়েছে। একাধিক পরিবারের ক্ষেত্রে একমাত্র আয়ের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে, যা বাসস্থান, খাদ্য এবং পরিবহণ খরচ মেটাতে সমস্যা তৈরি করছে। ২০২৫ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হওয়ায় এই পরিস্থিতি আরও গভীর প্রভাব ফেলেছে।

একই সময়, কিছু নারীর জন্য চাকরি ছাড়াই থাকা ইতিবাচক হতে পারে, যারা সঙ্গীর স্থিতিশীল আয়ের ওপর নির্ভরশীল বা নিজস্ব ব্যবসা শুরু করেছেন, তারা পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটাচ্ছেন বা ফ্রিল্যান্সিং করছেন। মহামারির সময় দূরবর্তী কাজের সুযোগ নারীদের পরিবার এবং কর্মজীবন মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করেছিল।

২০০০ সালের গোড়ার দিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকা নারীদের শ্রমশক্তি অংশগ্রহণ সাম্প্রতিক দশকে স্থবির হয়ে গেছে। মহামারির সময় বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ এবং নমনীয়তা নারীদের জন্য শ্রমশক্তিতে পুনঃপ্রবেশ সহজ করেছিল। এখন, অফিসে ফেরার নীতির কারণে এই সুবিধা কমে যাওয়ায় অংশগ্রহণ হ্রাস পাচ্ছে এবং নারীরা পরিবার ও কর্মজীবনের মধ্যে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

Link copied!