ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫

এবার কী পরবেন জেলেনস্কি?

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৫, ১১:০৭ পিএম
গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে জেলেনস্কি ও ট্রাম্প। ছবি- এপি

চলমান সংঘাত বন্ধে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতোমধ্যেই হোয়াইট হাউসে আসতে শুরু করেছেন বিশ্বনেতারা।

সোমবার (১৮ আগস্ট) গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ওভাল অফিসে প্রবেশ করার সময় জেলেনস্কি আরও ফরমাল পোশাক পরবেন বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। জেলেনস্কি এবার আগের তুলনায় আনুষ্ঠানিক উপস্থিতি বেছে নিয়েছেন।

ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে হোয়াইট হাউস সফরে সামরিক ধাঁচের পোশাকে হাজির হওয়া জেলেনস্কি এবার তুলনামূলক ভিন্ন একটি রূপ বেছে নিতে চলেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি জুনে নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে যে কালো জ্যাকেট পরেছিলেন, সেই একই ‘স্যুট-স্টাইল’ জ্যাকেটেই হাজির হবেন।

যদিও এটিকে পূর্ণাঙ্গ স্যুট বলা যাচ্ছে না এবং টাই পরারও সম্ভাবনা নেই, তবে এই পোশাককে প্রচলিত সামরিক রূপ থেকে এক ধাপ এগিয়ে ব্যবসায়িক ধাঁচের একটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষত ট্রাম্প শিবিরের মধ্যে।

২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ আক্রমণ শুরুর পর প্রথমবার ব্যবসায়িক ধাঁচের জ্যাকেট পরতে দেখা যায় জেলেনস্কিকে, যা ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করেছিল বলে অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো জানায়। তবে তার শেষ মার্কিন সফর বিতর্ক ছাড়া শেষ হয়নি।

তখন ট্রাম্প ওয়েস্ট উইংয়ে তাকে স্বাগত জানিয়ে সামরিক পোশাক নিয়ে ঠাট্টা করেছিলেন এবং সংবাদমাধ্যমকে রসিকতার সুরে বলেছিলেন, ‘তিনি আজ পুরোপুরি সজ্জিত’। সেই সফরে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও বিশেষভাবে বিরক্ত হয়েছিলেন, কারণ জেলেনস্কি টাই না পরায় বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মহল এখনো সংশয়ে আছে। তাদের একজন উপদেষ্টা মন্তব্য করেছেন, যদি জেলেনস্কি স্যুট পরেন তবে সেটি ‘শান্তির জন্য একটি ভালো লক্ষণ’ হবে, যদিও এমন প্রত্যাশা কম। আরেকজন অভ্যন্তরীণ ব্যক্তি বলেছেন, ‘তিনি যদি টাই পরতেন তবে এটি চমৎকার হতো, কিন্তু আমরা তা আশা করছি না।’

এবারের বৈঠক সোমবার বিকেল ৩টায় (ইস্টার্ন সময়) অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ট্রাম্পের সাথে যোগ দেবেন জেলেনস্কি এবং কয়েকজন ইউরোপীয় নেতা। এর ঠিক আগে, শুক্রবার আলাস্কায় ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, এবার ট্রাম্প জেলেনস্কিকে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির পরিবর্তে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করতে চাপ দিচ্ছেন, যেখানে ক্রিমিয়া ফেরত পাওয়া যাবে না এবং ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দেবে না।

ট্রাম্প নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি চাইলে প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ শেষ করতে পারেন, অথবা তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারেন। ওবামাকে ক্রিমিয়া ফেরত দেওয়া হবে না... এবং ইউক্রেন দিয়ে ন্যাটোতে যাওয়া হবে না। কিছু জিনিস কখনও বদলাবে না।’

জেলেনস্কির এই ফ্যাশন পরিবর্তনকে কূটনৈতিক দৃষ্টিতে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষত পূর্ববর্তী সফরে ট্রাম্পের ঠাট্টার প্রেক্ষাপটে। এবারও তাই তার কালো জ্যাকেট আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।