ঢাকা শনিবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৫

‘শ্বেতাঙ্গ গণতহ্যা’র অভিযোগে দক্ষিণ আফ্রিকার জি-২০ সম্মেলন বয়কট যুক্তরাষ্ট্রের

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ০২:৪৩ পিএম
ট্রাম্প ও রামাফোসা। ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, চলতি বছরের জি-২০ সম্মেলনে কোনো মার্কিন প্রতিনিধি অংশ নেবে না। তিনি দাবি করেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের ওপর ‘গণহত্যা’ চলছে এবং তা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। 

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে দেয়া পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘জি-২০ সম্মেলন দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হওয়া সম্পূর্ণ লজ্জাজনক। আফ্রিকানাররা হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, তাদের জমি বেআইনিভাবে বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনও মার্কিন সরকারি কর্মকর্তা সম্মেলনে যোগ দেবেন না।’

তিনি আরও জানান, ২০২৬ সালের জি-২০ সম্মেলন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে আয়োজনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। আগামী ২২ ও ২৩ নভেম্বর জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জি-২০ সম্মেলনে বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক শক্তির রাষ্ট্রপ্রধানরা উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন যে তিনি স্বয়ং সম্মেলনে যোগ দেবেন না, পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকাকে জি-২০ থেকে বহিষ্কার করারও দাবি তুলেছিলেন। যদিও, ট্রাম্প না গেলেও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে সম্মেলনে পাঠানোর কথা ছিল। তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের পর জেডি ভ্যান্সও দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করবেন না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষিজমি সংস্কার আইন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন দীর্ঘদিনের। প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা নতুন আইনের মাধ্যমে ভূমি বৈষম্য কমানোর উদ্যোগ নেন, যেখানে ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে ক্ষতিপূরণ ছাড়াই জমি অধিগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। রামাফোসার দাবি, এটি ‘জমি চুরি’ নয়, বরং ন্যায্য পুনর্বণ্টন।

কিন্তু ট্রাম্প বারবার অভিযোগ তুলেছেন যে দক্ষিণ আফ্রিকা শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের অবিচারের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় গত মে মাসে শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের একটি দলকে ‘জাতিগত বৈষম্যের শিকার’ দাবি করে আশ্রয়ও প্রদান করে যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে হোয়াইট হাউসে বৈঠকের সময় ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট রামাফোসাকে সরাসরি ‘শ্বেতাঙ্গ গণহত্যা’ নিয়ে প্রশ্ন করেন। রামাফোসা তাতে কঠোরভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় এ ধরনের কোনো নিপীড়ন ঘটছে না।

একই অবস্থান জানিয়ে দেশটির ইতিহাসবিদ ও গবেষকেরাও ট্রাম্পের দাবি ‘প্রমাণহীন ও মনগড়া’ বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে, ট্রাম্পের অসন্তোষের পেছনে দক্ষিণ আফ্রিকার গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলা দায়েরের বিষয়টিও ভূমিকা রাখতে পারে।