মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মেহেদী হাসান খাজা

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৫, ০১:২৪ এএম

ভোটে নিরপেক্ষ হয়ে ইমেজ ফেরাতে চায় পুলিশ

মেহেদী হাসান খাজা

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৫, ০১:২৪ এএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির ১০ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছে সরকার ও বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র। আর এই জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনি মাঠে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায় পুলিশ। 

সম্প্রতি এ বিষয়ে পুলিশ সদও দপ্তর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একটি সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের একটি বিশেষ সূত্র রূপালী বাংলাদেশকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
 
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই নির্বাচনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।  তাদের দাবি- আগামী নির্বাচনে নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পেলে পুলিশ আরো জনবান্ধব হয়ে উঠবে।

পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র জানায়, সম্প্রতি পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠকে মাঠ পর্যায়ের পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ থাকার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। কোনো দলের হয়ে পুলিশ কাজ করবে না। 

নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক পুলিশ সদর দপ্তরের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, জাতীয় নির্বাচনে পুলিশ কাজ করবে জনগণের হয়ে। কোনো ব্যক্তি যদি অন্যায় বা অনিয়মের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়, সেই ব্যক্তির দ্বারা ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। সুতরাং সব পুলিশ সদস্যদের বলা হচ্ছে, কারো দ্বারা ব্যবহৃত হবেন না। সঠিকভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন। এটাই হবে নতুন বাংলাদেশের পুলিশ। পুলিশ আর কখনোই জনবিচ্ছিন্ন হবে না। পুলিশ হবে জনবান্ধব। 

এ জন্য সম্প্রতি আলোচিত জাতীয় নির্বাচনে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পুলিশের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। সেটি বাস্তবায়নের জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে বলে ইঙ্গিত দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৫ আগস্টের পর ভেঙে পড়া পুলিশ বাহিনীকে সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য আগামী নির্বাচনে পুলিশকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। অন্যথায় আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা সম্ভব হবে না।

এসব বিষয়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা বলেন, পুলিশ যে জায়গায় পৌঁছেছিল, সেখান থেকে গত ১০ মাসে অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে আরও কিছুটা সময় লাগলেও মাঠে পর্যায়ে পুলিশ আগের অবস্থানে ফিরে এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি পুলিশকে ব্যবহারের চেষ্টা না করে, তাহলে দ্রুতই পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আগামী নির্বাচনের আগেই পুলিশ যথাযথ দায়িত্ব পালনের একটা জায়গায় পৌঁছবে।

সর্বোপরি পুলিশকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। অন্যথায় আগের অবস্থানের মতো সংকট কাটিয়ে ওঠা পুলিশের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। 

এ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, যেহেতু পুলিশ আগামী জাতীয় নির্বাচনে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাইছে, সেহেতু সেই সুযোগটা পুলিশকে দিতে হবে। পুলিশ যদি নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে না পারে, সে ক্ষেত্রে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। কাজেই পুলিশের এমন দাবি পূরণের যৌক্তিকতা রয়েছে বলে মনে করেন এই পুলিশ প্রধান।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পুলিশকে ঘুরে দাড়াঁনোর জন্য যে চেষ্টা চালাচ্ছে তা অনেকটা সফল। পুলিশ ঘুরে দাঁড়িয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য যে দাবি করছে, সেটা এই সরকারকেই বাস্তবায়ন করতে হবে। আইজিপি জানান, তবে এবার অনেকটা বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশ পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবে এবং এ বিষয়ে শিগগিরই ভূমিকা নিয়ে কাজ শুরু করবে সংস্থাটি।

অবশ্য এসব নিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রায় ১০ মাস আগে জনবিচ্ছিন্ন ও বিধ্বস্ত পুলিশ বাহিনী মাঠ ছেড়ে চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পুলিশ। পুড়ে যাওয়া থানা সংস্কার হয়েছে। আনা হয়েছে বেশ কিছু পরিবর্তন। ইতিমধ্যে আগের মতো রাজনৈতিক বলয় থেকে সরে এসে সক্রিয় হয়ে মাঠে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। 

একাধিক সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন আগে থেকেই নির্বাচনের জন্য পুলিশকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেয় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নির্বাচনের জন্য আসলে পুলিশ কতটুকু প্রস্তুত? কতটুকুই বা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে পুলিশ কাজ করতে পারবে বা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে, সেটা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠলেও পুলিশকে সব ধরনের মানুষের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যেকোনো মূল্যে জাতীয় ইলেকশনে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে ভেঙে পড়া পুলিশ ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে সংস্কার, নির্বাচনের প্রস্তুতি, নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনভাবে পুলিশ কাজ করার সুযোগ চাইলেও সেটা আমাদের দেশে বাস্তবায়ন হওয়া খুবই কঠিন।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, পুলিশ আগের তুলনায় এখন অনেকটা জনবান্ধব। তবে তারা যেহেতু জাতীয় নির্বাচনে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাইছে, তাহলে পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে কাজের সুযোগ করে দিতে হবে এই সরকারকেই।

যাতে পুলিশ কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। সংস্থাটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে যে সুপারিশ করেছে বাংলাদেশের রাজনীতি বিশ্লেষণ করে বলা যায়, সেটার যৌক্তিকতা অবশ্যই আছে। এ জন্য পুলিশকে আরও কৌশলী হয়ে কাজ করতে হবে, যাতে তারা আর কখনো জনবিচ্ছিন্ন হয়।

Link copied!