বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৪:৪৪ এএম

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে অংশীদারিত্ব গভীর করার অঙ্গীকার

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৪:৪৪ এএম

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে অংশীদারিত্ব গভীর করার অঙ্গীকার

  • মালয়েশিয়ায় আরও বাংলাদেশি কাজ করার সুযোগ পাবেন : আশা প্রধান উপদেষ্টার 
  • রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের ওপর তৈরি চাপে মালয়েশিয়া উদ্বিগ্ন : আনোয়ার ইব্রাহিম
  • বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে ৫টি সমঝোতা স্মারক, তিনটি নোট বিনিময় স্বাক্ষর

মালয়েশিয়া সফরের দ্বিতীয় দিন গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সে দেশের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে পুত্রজায়ার পার্দানা পুত্রা ভবনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। এ সময় উভয়ে দুদেশের সম্পর্ককে আরও গভীর এবং কৌশলগত ভবিষ্যৎমুখী অংশীদারিত্বে রূপান্তরের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রথমে দুই নেতা একান্ত বৈঠক করেন। এর আগে সীমিতসংখ্যক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে তারা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জনশক্তি ও জ্বালানি সহযোগিতা, নীল অর্থনীতি, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ বিস্তৃত পরিসরে দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনা করেন।

প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনার শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমাদের দুই দেশের মধ্যে ইতিহাস, ধর্ম ও সাংস্কৃতিক সহানুভূতির ভিত্তিতে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। মানবসম্পদ, বাণিজ্য ও জনগণের পারস্পরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের অনন্য অংশীদার। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম অধ্যাপক ইউনূসকে মালয়েশিয়ার বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করে গত এক বছরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তাঁর প্রশংসা করেন। তিনি বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণ, শিক্ষা এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

পরে একান্ত বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস প্রটোকল জটিলতায় আটকে পড়া ৮ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিককে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সুযোগ প্রদান ও মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা চালুর জন্য মালয়েশিয়ার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এর ফলে শ্রমিকরা জরুরি প্রয়োজনে দেশে ফিরে গিয়েও চাকরি হারানোর ঝুঁকি এড়াতে পারবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। বৈঠকে দুই পক্ষই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন, যাতে খরচ কমে এবং শ্রমিকদের কল্যাণ সুরক্ষিত হয়।

প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনায় আইন, বিচার ও প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল মালয়েশিয়াকে সরকার-টু-সরকার কাঠামোর মাধ্যমে আরও বেশিসংখ্যক দক্ষ বাংলাদেশি পেশাজীবী, যেমন চিকিৎসক ও প্রকৌশলী নিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বোয়েসেল বর্তমানে মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলোর জন্য শ্রমিক নিয়োগ পরিচালনার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশি নিরাপত্তারক্ষী ও সেবাকর্মীদের জন্য সুযোগ দেওয়া এবং মালয়েশিয়ায় অনিয়মিত বা অনিবন্ধিত বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়মিতকরণের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

মালয়েশিয়ার কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা এখন মালয়েশিয়ার শ্রমিকদের সমান সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা পাবেন এবং বাংলা ভাষায় অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। বাংলাদেশ হাজারো শিক্ষার্থীর জন্য ‘গ্র্যাজুয়েট পাস’ ভিসা চালুর অনুরোধ জানায়, যারা বর্তমানে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত।

উভয় নেতা বাংলাদেশকে আসিয়ানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা গভীর করার আকাক্সক্ষা নিয়ে আলোচনা করেন, যার মধ্যে রয়েছে সেক্টরাল ডায়লগ পার্টনার মর্যাদা পাওয়ার প্রচেষ্টা। এ বিষয়ে ড. ইউনূস আসিয়ানের চেয়ার হিসেবে মালয়েশিয়ার সমর্থন কামনা করেন। অধ্যাপক ড. ইউনূস মালয়েশিয়াকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সেপ্টেম্বর মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলনে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। তিনি রোহিঙ্গা জনগণের প্রতি মালয়েশিয়ার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

অর্থনৈতিক বিষয়ে, দুই পক্ষ বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনাকে ত্বরান্বিত করা, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাধ্যমে বিনিয়োগ সহযোগিতা জোরদার করা এবং মালয়েশিয়া বাংলাদেশ যৌথ ব্যবসা পরিষদ সক্রিয় করার বিষয়ে একমত হন। দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করে ওষুধ, ব্যাটারি, জুতা, সিরামিক ও পাটজাত পণ্যের জন্য মালয়েশিয়ার বাজারে আরও প্রবেশাধিকার চেয়েছে ঢাকা।

বাংলাদেশ নীল অর্থনীতি ও হালাল শিল্প উন্নয়নে মালয়েশিয়ার সহায়তা কামনা করে, যার মধ্যে ঢাকার বাইরে একটি হালাল অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনও অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া আঞ্চলিক বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বে (আরসিইপি) যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করে। দুই দেশই তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ ও জ্বালানি সহযোগিতার নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরকে স্বাগত জানায় এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি অংশীদারিত্ব অন্বেষণে সম্মত হয়। এছাড়া প্রতিরক্ষা, সংস্কৃতি ও পর্যটন ক্ষেত্রেও সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখার প্রশংসা করেন এবং প্রখ্যাত এশীয় সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদদের নিয়ে একটি সাংস্কৃতিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব দেন। এর আগে অধ্যাপক ইউনূস পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে তাঁকে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!