- সেতু ও রংপুর-লালমনিরহাট আঞ্চলিক সড়ক মারাত্মক ঝুঁকিতে
- ভাঙনে হুমকির মুখে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের ৫ গ্রাম ও ১,৭০০ পরিবার
- স্থানীয়রা কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় দ্বিতীয় তিস্তা সেতু রক্ষা বাঁধের প্রায় ১৩০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু এবং রংপুর-লালমনিরহাট আঞ্চলিক সড়ক। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে প্রায় ৩০-৩৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। হঠাৎ ভয়াবহ ভাঙনে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বৃহৎ এই সেতুটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গত ১১ আগস্ট সরেজমিনে দেখা গিয়েছিল, বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার অংশ ধসে ৭০ ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়। এরপর ১৭ আগস্ট ধস থেকে ভাঙনে রূপ নেয়। কিন্তু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে দেখা যায়, বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। ফলে রংপুর-লালমনিরহাট আঞ্চলিক সড়কসহ গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের প্রায় ১,৭০০ পরিবার এখন সরাসরি হুমকির মুখে। ভাঙন আরও তীব্র হলে এসব পরিবারের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস আগে থেকেই বাঁধের ব্লক ধসে পড়ছিল। বারবার জানালেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বাঁধসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা রিপন ও কাইয়ুম জানান, প্রতিদিন ভাঙন বাড়ছে। আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। ব্যবসায়ী শাহনাজ বেগম বলেন, ‘এই সড়ক দিয়েই প্রতিদিন শহরে যাই। সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাবে।’
শিক্ষার্থী বাদশা মিয়া বলেন, ‘প্রাইভেট পড়তে গিয়ে দেখি বাঁধ ভেঙে নদীতে চলে গেছে। কাল হয়তো রাস্তা থাকবে না।’ কৃষক খোরশেদ আলী বলেন, ‘আবাদি জমি নদীতে চলে যাচ্ছে। অথচ এলজিইডি শুধু আশ্বাস দিয়েছে, কোনো কাজ করেনি।’
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘আমরা বারবার এলজিইডিকে জানিয়েছি। কিন্তু তারা শুধু বলেছে দেখবে। এখন পুরো সেতুই হুমকির মুখে।’
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, ‘বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসা বলেন, ‘আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন