সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০১:১৮ এএম

কাঁচা পাটের সংকট, রপ্তানি বন্ধ চান ব্যবসায়ীরা

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০১:১৮ এএম

কাঁচা পাটের সংকট, রপ্তানি বন্ধ চান ব্যবসায়ীরা

দেশ থেকে কাঁচা পাট রপ্তানি সীমিত করেছে সরকার। এর পরেও সংকট দেখা দিয়েছে কাঁচা পাটের। মৌসুমের শুরুতেই সারা দেশে কাঁচা পাটের চড়া দাম উঠেছে এ বছর। এতে উদ্বিগ্ন পাটকল মালিকরা। তারা এখন পাট রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। এ অবস্থায়ও দেশের ১২ প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার ৯৮৪ টন পাট রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কাঁচাপাট রপ্তানি করতে গেলে এখন সরকারের অনুমতি নিতে হয়। গত মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে। বিদ্যমান রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ -এ শর্ত সাপেক্ষে পণ্য রপ্তানির একটি তালিকা রয়েছে। এ তালিকায় কাঁচা পাট ছিল না এত দিন। রপ্তানিনীতি সংশোধন করে পরিপত্রে শর্তযুক্ত পণ্য তালিকার ১৯ নম্বর ক্রমিকে কাঁচা পাট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রাপ্ত আবেদন সাপেক্ষে ওই ১২ প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পাটকল মালিকরা বলছেন, সরকার কাঁচা পাট রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করলেও স্থানীয় বাজারে পাট কার্যত উধাও হয়ে গেছে। এ মৌসুমে দেশের পাটকলগুলো উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল জোগাড়ে হিমশিম খাচ্ছে।

পাট অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত কৃষকরা প্রতি মণ পাট ৩ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু এখন প্রতি মণ পাটের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা। এই হঠাৎ দাম বৃদ্ধি ও বাজারে ঘাটতি পাটকল মালিকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। অনেকেই বলছেন, বছরের পর বছরেও এমন কঠিন পরিস্থিতি দেখা যায়নি, মৌসুমের মধ্যেই কাঁচামাল যেন হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো ব্যবসায়ী এবার অস্বাভাবিক পাট মজুতের অভিযোগও করছেন।

বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) ও বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) গত সপ্তাহে জরুরি বৈঠক করে কাঁচাপাটের সংকট, বাজার অস্থিরতা ও সরবরাহ ঘাটতি মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণের চেষ্টা করে। ওই সময় বিজেএসএ চেয়ারম্যান তপস প্রামাণিক বলেন, বাজারে এখন অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। অনেকে কাঁচাপাট মজুত করছেন, ফলে প্রকৃত মিল মালিকরা উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত পাট পাচ্ছেন না। এতে গোটা পাটশিল্প গভীর সংকটে পড়েছে। তিনি বলেন, যদি মিলগুলো কাঁচামাল না পায়, লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হবে, উৎপাদন বন্ধ হবে এবং দেশ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় উৎস হারাবে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে পাটের দাম ২০২১ সালের রেকর্ড ৬ হাজার ২০০ টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে। তখনই দেশ প্রায় ৩০ শতাংশ বাজার হারিয়েছিল। সে সময়ে পলিপ্রোপিলিন সুতা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কারণ ক্রেতারা ব্যয়বহুল পাটজাত পণ্যের পরিবর্তে সস্তা বিকল্পে ঝুঁকেছিল। যার প্রভাবে দেশে পরবর্তী সময়ে পাটের চাহিদা কমেছিল। বিজেএমএ চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, পাট খাত টিকিয়ে রাখতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য। প্রতিবেশী দেশগুলোর মতো আধুনিক ডেটা সেন্টার ও পৃথক ‘জুট কমিশন’ গঠন করা দরকার। এ ছাড়া অন্য ফসলের মতো কাঁচাপাটেরও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করা দরকার, যাতে কৃষক ন্যায্য মূল্য পান ও উৎপাদন ব্যয় মিটিয়ে মিলগুলো টিকে থাকতে পারে। তা না হলে রপ্তানি বাজারে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

বিজেএসএ ও বিজেএমএ উভয় সংগঠনই অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত কাঁচা পাট রপ্তানিতে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি জানিয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে এই খাত থেকে আয় হয়েছিল ১১৬ কোটি মার্কিন ডলার। পরের বছর তা কমে দাঁড়ায় ১১৩ কোটি ডলারে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানি আয় হয় ৯১১ দশমিক ৫১ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩-২৪ সালে ৮৫৫ দশমিক ২৩ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৮২০ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ডলারে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!