ফরিদপুরে আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক সাধারণ সভা ঘিরে আবারও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসন গিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় সভাটি বন্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রমিকদের অপর পক্ষের অভিযোগ, সভার ব্যানারে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলের কারও ছবি রাখা হয়নি।
জানা যায়, গতকাল সকালে শহরের গোয়ালচামট এলাকায় পুরাতন বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করা হয়। সকাল ১০টার দিকে সাধারণ সভার কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নেন সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল মান্নান শেখ মানা, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মো. আজাদসহ শ্রমিকদের একাংশ। তারা হলরুমে সাধারণ সভার ব্যানার টাঙানো ও প্যান্ডেল করার প্রস্তুতি নেন। সভা শেষে দরিদ্র শ্রমিক পরিবারের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা ও খাদ্য বিতরণের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এদিকে খবর পেয়ে জেলা শ্রমিক দলের একাংশের সভাপতি মোজাফফর আলী মুসার নেতৃত্বে শ্রমিকদের একটি পক্ষ সেখানে অবস্থান করে। পরে থানার পুলিশ গিয়ে সভা বন্ধ করে দেয়। এর আগে গত ২৮ জুন সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, সেদিনও একটি পক্ষের বাধায় তা প- হয়ে যায়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এ সাধারণ সভার আয়োজকদের আওয়ামী লীগের দোসর ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটার শঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের কাছে সংগঠনটির সদস্য মো. খায়রুল বাশার সবুজ লিখিত অভিযোগ করেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশপথ বন্ধ এবং দরজায় তালা ঝুলছে। সামনে পুলিশের ২০ থেকে ৩০ জন সদস্য অবস্থান করছেন। বাইরে জেলা শ্রমিক দলের একাংশের সভাপতি মোজাফফর আলী মুসাসহ তার সমর্থিত শ্রমিকেরা অবস্থান করছেন। দুপুর ১২টার দিকে রান্না করা ৮ পাতিল খাবার পৌরসভার বাস টার্মিনালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মোজাফফর আলী মুসা বলেন, ‘এই মঞ্চের ব্যানারে তারেক রহমান, খালেদা জিয়া ও শহিদ জিয়াউর রহমানের কোনো ছবি নেই। ফরিদপুর জেলা শ্রমিক দল জীবিত থাকতে ফরিদপুরের মাটিতে আওয়ামী লীগ ও কোনো সংগঠনকে প্রতিষ্ঠিত হতে দেব না। এই ফ্যাসিবাদের দোসররা গোপনে ঢাকা থেকে সাধারণ সভার অর্ডার করে এনে গোপনে সভার আয়োজন করে। জেলা শ্রমিক দলকেও অবগত করা হয়নি। তারা শ্রমিকদের ও জেলা শ্রমিক দলকে লাঞ্ছিত করেছেন। এ কারণে আমরা প্রতিহত করতে এসেছি।’
অন্যদিকে সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল মান্নান শেখ মানা নিজেকে জেলা শ্রমিক দলের এবং অপর একটি অংশের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেন। তিনি বলেন, ‘কী কারণে তারা এসব করছেন, আমি জানি না। একটি পক্ষ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছে, যে কারণে পুলিশ এসে বন্ধ করে দিয়েছে। আমি আজকের (গতকাল) পর থেকে আর শ্রমিক রাজনীতি করব না।’
জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক মো. আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, এই সভা ঘিরে একটি পক্ষ অভিযোগ করেছিল এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার শঙ্কা ছিল। এ কারণে আপাতত সভা বন্ধ রাখা হয়েছে। উভয় পক্ষ যদি একমত হতে পারে, তাহলে সভা করতে দেওয়া হবে। সকাল থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন