শনিবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রকিবুল ইসলাম আফ্রিদি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২৫, ০২:১২ এএম

শাকিব খানের নায়িকা হতে চাই

রকিবুল ইসলাম আফ্রিদি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২৫, ০২:১২ এএম

শাকিব খানের নায়িকা হতে চাই

এ সময়ের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী প্রিয়ন্তী উর্বী। ছোট ও বড় পর্দার এক তরুণ মুখ, যিনি খুব অল্প সময়েই দর্শকের দৃষ্টি কেড়েছেন নিজস্ব অভিনয়শৈলী ও প্রাণবন্ত উপস্থিতি দিয়ে। এক সময় মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া এই তরুণী এখন পরিণত হয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পড়াশোনা করলেও অভিনয়ের প্রতি গভীর ভালোবাসাই তাকে টেনে এনেছে ক্যামেরার সামনে। ২০২০ সালে বিজ্ঞাপনচিত্র দিয়ে শুরু, এরপর নাটকে অভিনয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা; এই পথচলাই উর্বীকে পৌঁছে দিয়েছে আলোচনায়।
বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন এই অভিনেত্রী। একের পর এক নতুন নাটকে অভিনয় করছেন তিনি, চরিত্রভেদে নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করছেন প্রতিবারই। উর্বীর ভাষায়, ‘নাটকে অভিনয় নিয়েই এখন ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। প্রতিটি চরিত্রের ভেতর ঢুকে কাজ করতে চাই, যেন দর্শক সেই চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হতে পারেন।’
অভিনয়ের এই যাত্রা কিন্তু নতুন নয়, বরং শৈশবেই এর বীজ বোনা হয়েছিল তার ভেতরে। সেই স্মৃতি টেনে উর্বী দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার অভিনয়ের প্রতি একটা আগ্রহ ছিল। ছোটবেলায় যখন টিভি চলত, তখন আমাকে দিয়ে কিছুই করানো যেত না। আমি হয়তো ঘুমাচ্ছি, কিন্তু আমার প্রিয় বিজ্ঞাপন টিভিতে চললেই ঘুম ভেঙে টিভির সামনে বসে পড়তাম।’
পরিবারের শিল্পসমৃদ্ধ পরিবেশই তার অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অভিনেতা শহিদুজ্জামান সেলিম তার বড় মামা এবং অভিনেত্রী রোজী সিদ্দিকী তার মামি, তাদের কাছ থেকে প্রিয়ন্তী ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। সেই পারিবারিক প্রভাব আর নিজের স্বপ্ন মিলেই আজকের প্রিয়ন্তী উর্বীকে গড়ে তুলেছে একজন নিবেদিতপ্রাণ অভিনেত্রী হিসেবে।
সম্প্রতি বিয়ের পর প্রিয়ন্তী উর্বীর জীবনে যুক্ত হয়েছে নতুন এক অধ্যায়Ñ সংসার। অভিনয়ের ব্যস্ততা আর ব্যক্তিগত জীবনের দায়িত্ব, দুটো দিকই এখন সমান গুরুত্ব পাচ্ছে তার জীবনে। হাসিমুখে উর্বী বলেন, ‘আগে যেভাবে বাবা-মাকে সময় দিতাম, এখন হাসবেন্ডকে সময় দেই। সব মিলিয়ে একটু কষ্ট হয়, কিন্তু এইটাই জীবন।’ তার কণ্ঠে ছিল এক ধরনের বাস্তববোধ ও পরিণত ভাব, যেন বুঝিয়ে দিলেন; জীবনের প্রতিটি পর্যায়ই আসলে শেখার আর সামলানোর এক নতুন অধ্যায়।
বিয়ের পর অভিনয়জীবনে কোনো বাধা পেয়েছেন কিনা, এই প্রশ্নে প্রিয়ন্তী উত্তর দিয়েছেন একেবারে সোজাসাপটা ভাষায়। বললেন, ‘আমার স্বামীর পরিবার আমাকে কেন বাধা দেবে? আমার স্বামীর পরিবার কি আমাকে খাওয়ায়, পড়ায়; বড় করেছে? তারা আমাকে বাধা দেওয়ার কেউ না। যেই পরিবার আমাকে চিনত না, আমার স্বামীর মাধ্যমে চিনেছে, সেই পরিবার যদি আমাকে বাধা দিত, তাহলে কি আমি সেখানে বিয়ে করতাম?।’ কথাগুলোয় যেমন আত্মবিশ্বাস, তেমনি স্পষ্টতা। নিজের কাজ ও ব্যক্তিত্বের জায়গায় তিনি যে স্বাধীন ও আত্মমর্যাদাশীল, তা তার উত্তরের মধ্যেই পরিষ্কার।
বাংলাদেশের বিনোদন অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরেই একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে, বিয়ের পর নাকি অভিনেত্রীদের জনপ্রিয়তা কমে যায়। প্রিয়ন্তী উর্বী এই মতের সঙ্গে একেবারেই একমত নন। এক চিলতে হাসি দিয়ে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা আমিও শুনেছি। সে কারণেই হয়তো অনেকেই বিয়ে করে প্রকাশ্যে কিছু বলেন না। কিন্তু আমার মনে হয়, এটা পুরোপুরি ভুল ধারণা। কারণ বিয়ের পর আলহামদুলিল্লাহ আমার কাজ বেড়েছে এবং আমি আরও ভালো কাজ করছি। বিয়ে একটি আল্লাহর নেয়ামত। বরং আমার মনে হয়, বিয়ের পর কাজের প্রস্তাবগুলো আরও ভালোভাবে আসছে।’ তার কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস আর কৃতজ্ঞতার সুর, যেন বুঝিয়ে দিলেন, সংসার ও ক্যারিয়ার একসঙ্গে চললে নারীর সম্ভাবনা কমে না, বরং আরও প্রসারিত হয়। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়েও উর্বীর মুখে সন্তুষ্টির ঝলক। এই নতুন মাধ্যমের পেশাদার পরিবেশ তাকে মুগ্ধ করেছে। তিনি বলেন, ‘ওটিটিতে কাজের অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। এখানে সবকিছুই পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়, পোশাক-পরিচ্ছদও ঠিকঠাক থাকে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা বিভাগ থাকে। সব মিলিয়ে মনে হয় সময় অনেক পাওয়া যায়, আর অভিনয়ের জন্য চরিত্র গড়ে তুলতে অনেক সহজ হয়।’ তার মতে, এই মাধ্যমটি শিল্পীদের শুধু কাজের পরিসরই বাড়ায়নি, বরং অভিনয়ের মান ও প্রস্তুতিকেও করেছে আরও পরিপূর্ণ।
অভিনয় জীবনের শুরুর দিকেই প্রিয়ন্তী উর্বী চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন ‘স্বপ্নবাজী’ নামের একটি সিনেমায়। কিন্তু নানা কারণে সেই সিনেমার কোনো খোঁজ মেলেনি। এরপর দীর্ঘ অপেক্ষার পর বড় পর্দায় তার অভিষেক হয় ‘নীলচক্র’ সিনেমার মাধ্যমে। এই চলচ্চিত্রটি নিয়ে তিনি ভীষণ আশাবাদী ছিলেন, আর মুক্তির পর সেই প্রত্যাশা যেন আরও বেড়ে গেছে। হাসি মুখে উর্বী বলেন, ‘দর্শকদের কাছ থেকে আমি অনেক সাড়া পেয়েছি। সিনেমাটি যারাই দেখেছে, সবাই আমার চরিত্র এবং অভিনয়ের প্রশংসা করেছে। আমার খুব ভালো লেগেছে।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উর্বীর চোখে যেন আরও বড় স্বপ্নের দীপ্তি জ্বলে উঠল। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমি নিজেকে অনেক বড় বড় জায়গায় দেখতে চাই। নিজেকে আরও ভালো কাজে দেখতে চাই। বেশ কিছু সিনেমা করতে চাই। শাকিব খানের নায়িকা হতে চাই।’ তার এই খোলামেলা স্বপ্ন যেন আগ্রহ জাগায়। তরুণ এই অভিনেত্রীর পথচলা মাত্র শুরু, কিন্তু উচ্চাকাক্সক্ষা ও পরিশ্রমের মেলবন্ধনে তিনি যে আরও দূর যেতে চান, তা তার প্রতিটি কথায়ই স্পষ্ট। সম্প্রতি ছোট পর্দায় একের পর এক নাটকে দেখা যাচ্ছে এই অভিনেত্রীকে। আগের তুলনায় তার কাজের সংখ্যা বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। এই পরিবর্তনের পেছনের কারণ জানতে চাইলে উর্বী বলেন, ‘যত দিন যাচ্ছে, দর্শক পরিচিতি আরও বেশি পাচ্ছি; তাই কাজের সংখ্যাও বাড়ছে, এটাই স্বাভাবিক। আগে যখন নতুন ছিলাম, তখন যেরকম কাজ পেতাম, এখন একটু পুরোনো হয়েছি, তাই কাজও একটু বেশি আসছে। আরেকটু সময় গেলে আরও বাড়বে আশা করি। আমি হয়তো সেটে অনেক অ্যাকটিভ, মনোযোগী আর পরিশ্রমী, এটাও একটা কারণ হতে পারে।’ তার কথায় ফুটে ওঠে ধৈর্য আর আত্মবিশ্বাস, যা তাকে ধীরে ধীরে শিল্পী হিসেবে পরিণত করছে।
নির্মাতা জাহিদ প্রীতমের জনপ্রিয় নাটক বুক পকেটের গল্প-এ অভিনয় করে দর্শকের দারুণ সাড়া পেয়েছিলেন উর্বী। সেই নাটকের মাধ্যমে তিনি আলোচনায় আসেন এবং নতুন এক অভিনয় পরিচয়ে নিজেকে তুলে ধরেন। সম্প্রতি একই নির্মাতার নতুন একটি কাজেও অভিনয় করেছেন তিনি। নতুন কাজটি নিয়ে আশাবাদী উর্বী বলেন, ‘আমি অনেক আশাবাদী। যদি এই কাজটি বুক পকেটের গল্পকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে, তাহলে তো কোনো কথাই নেই। দুইটি গল্পের ধরন একেবারেই আলাদা। বুক পকেটের গল্প অন্যরকম জায়গায় চলে গিয়েছে। আমি সবসময় চাই আমার প্রতিটি প্রজেক্ট আগের চেয়ে ভালো হোক। তবে সত্যি বলতে, বুক পকেটের গল্পকে ছাড়িয়ে যাওয়া বেশ কঠিন।’
নতুন সিনেমা নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে উর্বী জানান, আপাতত বড় পর্দায় নতুন কোনো সিনেময় চুক্তিবদ্ধ হননি। তবে তিনি মন দিয়ে ভালো গল্পের অপেক্ষায় আছেন। এখনো নতুন কোনো সিনেমা সাইন করিনি জানিয়ে উর্বী বলেন, ‘ভালো কোনো গল্প পেলে অবশ্যই চুক্তিবদ্ধ হবো। তখন দর্শকরাও জানতে পারবে নতুন কাজের খবর।’ তার কণ্ঠে ছিল দৃঢ়তা ও আশাবাদ, যা ইঙ্গিত দেয় তিনি সময় নিয়ে; পছন্দের কাজই করতে চান, সংখ্যার চেয়ে মানই তার কাছে বড়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!