কিছু ব্যক্তি নানান ইস্যু তৈরি করে নির্বাচন নিয়ে সংকট সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এই সংকট মোকাবিলায় তিনি বলেছেন, নির্বাচন সফল করতে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা পার্লামেন্টে গিয়ে সরকার গঠন করলে বর্তমান সরকার সম্মানের সঙ্গে পদত্যাগ করতে পারবে। নির্বাচন ছাড়া বিকল্প নেই। আজ হোক কাল হোক, নির্বাচন হতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে ‘রি-ইমাজিনিং বাংলাদেশ’স পলিটিক্যাল ফিউচার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন। এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘ঢাকা ফোরাম ইনিশিয়েটিভ’ নামে একটি সংগঠন। সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাজনৈতিক চিন্তা ও নীতিনির্ধারণের ওপর রচিত বই ‘তারেক রহমান পলিটিকস অ্যান্ড পলিসিস ইন কনটেম্পোরারি বাংলাদেশ’ এবং সম্প্রতি দেওয়া একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকার নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান গণতান্ত্রিক শাসন, নেতৃত্বের দর্শন এবং নীতিকাঠামোর ওপর আলোকপাত করা হয়।
নির্বাচনের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই; তাই নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সবচেয়ে নিরাপদ সময় হলো আগামী ফেব্রুয়ারি। এর পরে রোজা চলে আসবে। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গ তুলে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নির্বাচন বিলম্বিত বা বাতিল করার ষড়যন্ত্র চলছে। খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সমসাময়িক রাজনীতির মূল কথা হলো নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করার পাশাপাশি দ্বিতীয় কথা ছিল, যত দ্রুত সম্ভব এই সরকার নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। অন্তর্বর্তী সরকারও গণমাধ্যমে জনগণকে এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে। নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে দলের প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, দল ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে, তবে কেউ কেউ ষড়যন্ত্র করছে। পিআর (সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি) লাগবে, তবে এর ব্যাখ্যা যথাযথভাবে দেওয়া হচ্ছে না।
পিআর হলে এমন সময়ও আসতে পারে, যখন দেশে কোনো সরকার গঠন সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন খন্দকার মোশাররফ। আলোচনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সমসাময়িক রাজনীতিতে বাংলাদেশে তারেক রহমান তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা ও বাতিঘর হিসেবে অভিহিত করেছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলের সমালোচনা করে আমীর খসরু বলেন, যারা বর্তমানে সংস্কারের জন্য উৎসাহী হয়ে উঠেছেন, তাদের জানা উচিত, বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০-এর মাধ্যমে ২০১৬ সালে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বিএনপির ৩১ দফার কথা উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, তিনি (তারেক রহমান) ৩১ দফার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি গড়ে তুলতে চাইছেন, যাতে সবার জন্য সমানভাবে জায়গা থাকে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ‘উইনার টেক অল’ ব্যবস্থা, যেখানে ক্ষমতায় যাওয়া দল দেশের সম্পদের একচেটিয়া মালিক হয়ে যায়।
জাতীয়তাবাদী চেতনায় সবাইকে নিয়ে দেশ গঠন শুধু একটি দলের পক্ষে সম্ভব নয় উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, তারেক রহমান কেবল ৩১ দফায় নয়, বরং তার কাজের মাধ্যমে বিষয়টি প্রমাণ করছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রনীতি প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ। তিনি পরস্পরের সম্মানবোধ, মিউচুয়াল ইন্টারেস্ট এবং বাংলাদেশের মানুষের ভূরাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি অনুসরণ করতে চান। এ ছাড়া আমীর খসরু বক্তব্যে বাংলাদের অর্থনীতির গণতান্ত্রিকীকরণ, তরুণদের জন্য চাকরির সুযোগ সৃষ্টিসহ নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তারেক রহমান মানুষের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে চান, সরকারের নয়।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন