রাজধানীজুড়ে তীব্র যানজটে চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা। গণভোটসহ নানা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলের যমুনা অভিমুখে স্মারকলিপি প্রদান এবং প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচির কারণে পল্টন, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট, মৎস্য ভবন, কাকরাইলসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, এসব এলাকায় দীর্ঘ যানজটের কারণে স্থবির হয়ে পড়ে যান চলাচল। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস হওয়ায় কর্মব্যস্ততার চাপের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সড়ক অবরোধের ভোগান্তি। ফলে রাজধানীর ব্যস্ত এলাকাগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন একই জায়গায় আটকে যায়।
পল্টন থেকে শাহবাগ অভিমুখের রাস্তাজুড়ে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে বসে থাকতে দেখা যায় চালকদের। অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজলেও কেউ জায়গা দিতে পারছে না। আশপাশের অলিগলিতেও আটকে পড়েছে ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। এতে অনেকে বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে রওনা হয়েছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।
এয়ারপোর্ট গণপরিবহনের যাত্রী মকবুল ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্টের পর ভেবেছিলাম দেশটা নিয়মশৃঙ্খলায় ফিরবে। কিন্তু এখন দেখছি প্রতিদিনই কোনো না কোনো দাবি নিয়ে রাস্তায় মিছিল, অবরোধ, মানববন্ধন। এতে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।’ এক পথচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সদরঘাট থেকে পল্টনে আসতে সময় লেগেছে দুই ঘণ্টা। উপায় না পেয়ে হেঁটে কারওয়ান বাজারের দিকে রওনা হয়েছি। দাবি মানাতে হলে রাস্তায় নামতেই হবেÑ এটা কেমন নিয়ম!’
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লুৎফর জামিল বলেন, ‘প্রতিদিন আন্দোলনের কারণে রাজধানীতে যানজট অসহনীয় হয়ে উঠছে। মানুষের সংখ্যা এমনিতেই বেশি, তার ওপর রাস্তায় জ্যাম। এখন তো মনে হয় ১৪৪ ধারা জারি করা উচিত, যাতে কেউ রাস্তায় কর্মসূচি দিতে না পারে।’ ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী লতিফ লতা বলেন, ‘মৎস্য ভবন এলাকায় সড়ক বন্ধ থাকায় স্কুল থেকে প্রেসক্লাবে আসতে এক ঘণ্টা লেগেছে। আজিমপুরে বাসায় যেতে কতক্ষণ লাগবে জানি না। প্রতিদিনই রাস্তা বন্ধ করা এখন যেন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। এর থেকে মুক্তি চাই।’
হাইকোর্ট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) সংগ্রাম দেবনাথ বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে মৎস্য ভবন এলাকা বন্ধ রাখা হয়েছে। ডাইভারশন দিয়ে গাড়ি চালানো হচ্ছে, যাতে দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক করা যায়। সপ্তাহের শেষ দিন হওয়ায় এমনিতেই চাপ বেশি থাকে, তার ওপর নানা কর্মসূচি থাকায় পুরো এলাকা প্রায় অচল। ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রেসক্লাব ও পল্টন এলাকায় অন্তত পাঁচটি সংগঠনের কর্মসূচি থাকায় পুরো এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খেতে হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন