সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আজিজ আল ফয়সাল, ফেনী

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৫, ০২:৩৯ এএম

দুই বছরেও চালু হয়নি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট

আজিজ আল ফয়সাল, ফেনী

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৫, ০২:৩৯ এএম

দুই বছরেও চালু হয়নি  ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট

*** ফেনী পৌরসভা
*** বিকল হয়ে যাচ্ছে প্রকল্পের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি
*** নষ্ট হয়ে গেছে ইলেক্ট্রিকের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি
*** সুপেয় ও বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পৌর-শহরের মানুষ
*** অনেকে পানির সংকট মেটাতে আইন ভঙ্গ করে স্থাপন করছে গভীর নলকূপ

ফেনী পৌরসভায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টটি নির্মাণের দুই বছর পার হলেও এখনো চালু করা হয়নি। ফলে সুপেয় ও বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পৌর-শহরের মানুষ। পাশাপাশি নষ্ট হয়ে বিকল হয়ে যাচ্ছে প্রকল্পের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। স্থানীয়রা জানান, ফেনী পৌরসভার চলমান পানি সরবরাহ প্রকল্পের পানির মানও সন্তোষজনক নয়। প্রায় লাইনে ময়লা পানি আসে, যা ব্যবহারের অযোগ্য। ফলে সুপেয় পানি নিয়ে অসন্তোস প্রকাশ করছেন ২ হাজারের বেশি গ্রাহক। তবে পৌরসভা জানিয়েছে, নতুন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট দ্রুত চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, ৩৬ জেলা শহরে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ফেনী পৌরসভার হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন বিরিঞ্চি এলাকায় স্থাপন করা হয় বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্প। দরপত্র আহ্বানের পর ২০১৯ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের এ কাজটি ২ বছর মেয়াদে বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় শামীম ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আড়াই লাখ ঘনমিটার পানি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এ প্রকল্পে ৯টি গভীর নলকূপ ও ৪০ কিলোমিটার সরবরাহ লাইন স্থাপন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন সময়ে কাজের গতি কমে যাওয়ায় কালক্ষেপণ করে ২০২৩ সালে প্রকল্পটি নির্মাণকাজ শেষ করে ফেনী পৌরসভার নিকট হস্তান্তর করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। সেই থেকে এখন পর্যন্ত অযতেœ অবহেলায় পড়ে আছে সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, সীমানা প্রাচীর ঘেরা প্রকল্প এলাকার প্রধান ফটকে তালা ঝুলানো। প্রকল্পটি নির্মাণকাজ ২০২৩ সালে শেষ হলেও ২০২০ সালে এটি উদ্বোধন হয়েছে মর্মে স্থাপন করা একটি ফলক দেখা গেছে। ভেতরের বিভিন্ন লোহার সরঞ্জামাদি জং ধরে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে ইলেক্ট্রিকের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। এ প্রকল্পটি কেন বা কি কারণে স্থাপন করা হয়েছে; বিষয়টি জানেন না স্থানীয়রা।

ফেনী পৌরসভার একাধিক সূত্র জানায়, প্রকল্পটিতে ৪০ কিলোমিটার পানি সরবরাহ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। পরে ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে আরও ৪০ কিলোমিটার পানি সরবরাহ লাইন স্থাপনের কাজ শেষ হলে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পরিকল্পনা মোতাবেক অতিরিক্ত ৪০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করতে ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ফেনী পৌরসভা থেকে আরিফ নামের এক ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর ওই ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে ফেনী পৌরসভার কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় প্রকল্পটি থমকে যায়। পানি শোধনাগারের প্রকল্পটি চালু না হওয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত পাম্প অপারেটর সৌরভকে পৌরসভার অন্য বিভাগে নিয়োজিত রাখা হয়েছে।

ফেনী পৌরসভার বাসিন্দারা জানান, বর্তমানে ফেনী পৌর এলাকায় ৩টি পানির ট্যাংকের মাধ্যমে নাগরিকদের পানি সরবরাহ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পুরাতন ওই প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ৬০০ গ্রাহক প্রতি গ্যালন পানি (১০০০ লিটার) আবাসিকে ৯ টাকা ও বাণিজ্যিকে ২২ টাকা হারে বিল পরিশোধ করে থাকেন। কিন্তু এ প্রকল্পের পানির মাঝে ময়লা-আবর্জনা থাকায় দিন দিন গ্রাহকরা পৌরসভা থেকে পানির সুবিধা নেওয়া বন্ধ করতে শুরু করেছে।  পৗরসভা থেকে চাহিদামত সুপেয় ও বিশুদ্ধ পানি না পাওয়ায় অনেক বাড়ির মালিক বাধ্য হয়ে আইন ভঙ্গ করে নিজ বাড়িতে গভীর নলকূপ স্থাপন করে পানির সংকট মেটাচ্ছেন।

মো. বেলাল হোসেন নামের পৌর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ফেনী পৌরসভায় পুরাতন পানির ট্রাংকিগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে পড়েছে। এসব ট্রাংকি থেকে সরবরাহকৃত পানির গুণগত মান না থাকায় বাধ্য হয়ে মানুষ শহরে গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি তুলছে। নতুনভাবে স্থাপিত প্রকল্পটি চালু হলে এ শহরের অন্তত ২ লাখ মানুষ বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানি ব্যবহারের সুযোগ পেত। এতে করে একদিকে মানুষের উপকার হতো অন্যদিকে পৌরসভার রাজস্ব আয় বাড়ত।

পৌরসভার আরেক বাসিন্দা মুস্তাফিজুর রহমান জানান, পৌরসভার পানি দীর্ঘদিন ব্যবহার করে আসছি। গত তিন মাস ধরে পানিতে ব্যপক ময়লা দেখা যায়। এবং মাঝে মাঝে পানির সঙ্গে জোঁকও দেখতে পায়। পানিও তেমন আসে না। এসব সমস্যা সমাধান দ্রুত করার অনুরোধ রইল। মাসিক বিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পানি মিটারে যতটুকু ব্যবহার হয় ততটুকু বিল হয়। এতে পার গ্যালন অর্থাৎ (১ হাজার লিটার) পরিমাণ ৯ টাকা আসে।

ফেনী পৌরসভার প্রশাসক (উপ-সচিব) গোলাম মো. বাতেন বলেন, ২০২৪-এর বন্যার সময়ে পানি শোধনাগারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা এটি দ্রুত চালু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করি প্রয়োজনীয় মেরামত কাজ শেষে আমরা শিগগিরই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টটি চালু করতে পারব।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!