নরসিংদীর উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা বিগত দশ বছর ধরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জলপাই চাষে এগিয়ে আসছেন। জেলার শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব ও রায়পুরা উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় সবজি চাষের পাশাপাশি এখন জলপাই চাষই প্রধান আগ্রহের কেন্দ্র। এ অঞ্চলটি সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত থাকলেও গত কয়েক বছর যাবত পাহাড়িয়া এলাকার অধিকাংশ চাষি সবজি চাষ বাদ দিয়ে জলপাই চাষের প্রতি আগ্রহ হয়ে পড়ছে বেশি।
রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের ধুকুন্দী গ্রামের জলপাই চাষি আলিম উদ্দিন জানান, ইতিপূর্বে তিনি তার জমিতে সবজি চাষ করতেন তার বাড়ির আঙিনায় মাত্র চারটি জলপাই গাছ ছিল। এ চারটি গাছ থেকে তিনি ১ বছরে ১ হাজার ৫০০ কেজি জলপাই পান এবং প্রতি কেজি জলপাই ৩০ টাকা করে মোট ৪৫ হাজার টাকা বিক্রি করেন। এরপর থেকে তিনি লাভ বেশি হওয়ায় সবজি চাষ বাদ দিয়ে জলপাই চাষ শুরু করেছেন। বর্তমানে তিনি ২ একর জমিতে প্রায় ৪শ জলপাই গাছের চারা রোপণ করেছেন। ২ একর জমি থেকে এ বছর তিনি আনুমানিক ১২ হাজার কেজি জলপাই পেয়েছেন এবং প্রতি কেজি জলপাই পাইকারি ২০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এতে তার সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।
জেলার শিবপুর উপজেলার শিবপুর বাজার, যশোর বাজার, মনোহরদী উপজেলার হাতিরদিয়া বাজার, বেলাব উপজেলার বেলাব বাজার ও রায়পুরা উপজেলার বারৈচা, মরজাল ও জঙ্গী শিবপুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে প্রতি কেজি জলপাই ২০-৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে এসব জলপাই ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। শিবপুর উপজেলার কামারটেক গ্রামের জলপাই চাষি আব্দুর বারেক জানায়, তিনিও ইতিপূর্বে সবজির চাষ করতেন। খরচ কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় তিনি জলপাই চাষ শুরু করেছেন। তিনি বর্তমানে একজন সফল জলপাই চাষি হিসেবে নিজেকে স্বাবলম্বী করতে সক্ষম হয়েছেন এবং এলাকায় জলপাই চাষি হিসেবে পরিচিত লাভ করেছেন। অধিকাংশ পাইকাররা তার বাড়ি গিয়ে জলপাই ক্রয় করে নিয়ে আসে।
নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্বাক্ষর চন্দ্র বনিক জানান, বর্তমানে নরসিংদীতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জলপাই চাষ করা হচ্ছে এবং সেগুলো দেশের চাহিদা মিটিয়েও বিদেশি রপ্তানি করা হচ্ছে। এতে করে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন