আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনি সংলাপে বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংলাপের প্রথমেই ১২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসতে চায় ইসি। সংলাপ শুরুর পাশাপাশি নির্বাচনি প্রচারণায় প্রথমবারের মতো পোস্টার ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে প্রচারণার কাজে ড্রোন ব্যবহার এবং বিদেশে প্রচারণায়ও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক বলেন, ‘আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয়টি এবং দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ছয়টিÑ মোট ১২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।’
জানা যায়, সকালে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। দুপুরে সংলাপ হবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) সঙ্গে।
এদিকে গতকাল দুপুরে নির্বাচনি সংলাপে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল থাকবে কি না, জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘নিবন্ধিত সব দল নিয়েই তো আলোচনা করতে হবে।’ জাতীয় পার্টিকে সংলাপে ডাকা হবে কি না, জানতে চাইলে বিষয়টি ‘এড়িয়ে গিয়ে’ ইসি সচিব বলেন, ‘কাদের ডাকব এখনো ঠিক করিনি। আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। ধাপে ধাপে জানতে পারবেন।’
দলগুলোর সঙ্গে কী বিষয়ে আলোচনা হবে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘আরপিও ও আচরণবিধিতে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাদের সহযোগিতাÑ এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। তাদের বক্তব্য শুনব।’
আখতার আহমেদ জানান, প্রচারণায় প্লাস্টিকের কোনো জিনিস ব্যবহার করা যাবে না। তবে ইলেকট্রনিক ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড ব্যবহার করা যাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, নির্বাচনি এলাকার সীমানা জটিলতায় নির্বাচনের তপশিলে প্রভাব পড়তে পারে। তবে তা নির্ভর করবে আদালতের আদেশের পর্যালোচনার ওপর।
এর আগে, গত সোমবার রাতে নির্বাচন সামনে রেখে ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ জারি করে নির্বাচন কমিশন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারির পর সেই আলোকেই আচরণবিধি গেজেট আকারে জারি করে ইসি। এই বিধিমালায় প্রথমবারের মতো ভোটের প্রচারে পোস্টার ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় ভোটের প্রচারে কড়াকড়ি আরোপ, অসৎ উদ্দেশ্যে এআই ব্যবহারে মানাসহ আসনপ্রতি ২০টির বেশি বিলবোর্ড না দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে।
আচরণবিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদ- ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা এবং দলের জন্য দেড় লাখ টাকা অর্থদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে তদন্ত সাপেক্ষে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও রয়েছে ইসির। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এবং ২০০৮ সালের আচরণবিধির সঙ্গে সমন্বয় রেখে বেশ কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করে এবার নতুন আচরণবিধি প্রণয়ন করল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন