শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


খলিল উদ্দিন ফরিদ, ভোলা

প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৫, ০৬:১৪ এএম

ভাসমান মাছের খামারে বদলে যাচ্ছে উপকূল

খলিল উদ্দিন ফরিদ, ভোলা

প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৫, ০৬:১৪ এএম

ভোলায়  খাঁচায় মাছ চাষ উপকূলের প্রান্তিক মৎস্যজীবীদের। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ভোলায় খাঁচায় মাছ চাষ উপকূলের প্রান্তিক মৎস্যজীবীদের। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ভোলার নদী-নালা, খাল ও জলাশয়ে খাঁচায় মাছ চাষ করে দিন বদলের গল্প বুনছেন উপকূলের প্রান্তিক মৎস্যজীবীরা। নদীর বুকেই গড়ে উঠেছে ভাসমান খামার, যেখানে ছোট ছোট খাঁচায় তেলাপিয়া, পাঙাশ, কার্প ও সরপুঁটি মাছ চাষ করে ভাগ্য ফিরিয়েছেন বহু চাষি। সুস্বাদু মাছের উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হওয়ায় বদলে যাচ্ছে উপকূলের অর্থনীতির চিত্র।

চাষিরা জানাচ্ছেন, খাঁচায় মাছ চাষে পুকুর বা জমির দরকার পড়ে না। শুধু জিআই পাইপ, প্লাস্টিক ড্রাম, জাল ও দড়ি দিয়ে বানানো একটি খাঁচা স্থাপন করলেই চলে। প্রতি খাঁচা তৈরিতে খরচ পড়ে ১০-১২ হাজার টাকা। একটি খাঁচায় চাষ করা যায় প্রায় ১ হাজার মাছ, যা বিক্রি করে বছরে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় সম্ভব।

ভোলা সদর উপজেলার চর সেমাইয়া, শান্তিরহাট, ভেলুমিয়া ও ভেদুরিয়ার নদী ও খালের জলাশয়ে শতাধিক চাষি এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করছেন। চাষিরা বলছেন, বছরে দুবার চাষ করা যায়। মাছ বড় হয় তিন-চার মাসেই। বাজারে প্রতি কেজি মাছের দাম ২০০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত। ফলে খরচ কম, লাভ বেশি।

প্রধান উদ্যোক্তা মো. আনোয়ার বলেন, ‘পুকুরে মাছ চাষের চেয়ে খাঁচায় চাষে মাছের বৃদ্ধির হার অনেক বেশি। নদীর প্রবহমান পানি ও প্রাকৃতিক খাদ্যের জন্য মাছ সুস্বাদু হয়, দামও ভালো পাওয়া যায়।’

ভেদুরিয়া এলাকার পঙ্গাশিয়া নদীতে স্থাপিত ১০০টি খাঁচা থেকে বছরে প্রায় ছয় মেট্রিক টন তেলাপিয়া উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮ লাখ টাকা।

গ্রামীণ জন-উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস) ও পল্লি কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) যৌথ উদ্যোগে এই চাষ পদ্ধতি ভোলার মৎস্যজীবীদের মধ্যে পরিচিতি পায়। চাষের শুরুর পর্যায়ে চাষিদের প্রশিক্ষণ, খাঁচা, নেট, পোনা এবং প্রাথমিক সহায়তা দিয়েছে তারা।

জিজেইউএসের টেকনিক্যাল অফিসার আরিফুজ্জামান বলেন, ‘এটি শুধু মাছ চাষ নয়, নদীতে প্রাকৃতিক মাছের আশ্রয়স্থলও তৈরি হচ্ছে খাঁচার আশপাশে। ফলে প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদনও বাড়ছে।’

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ‘খাঁচায় মাছ চাষে রোগবালাইয়ের ঝুঁকি কম, দুর্যোগে ক্ষতির আশঙ্কা কম এবং মাছ খেয়ে ফেলার আশঙ্কাও নেই। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এই পদ্ধতিকে আরও ছড়িয়ে দিতে সহযোগিতা করছি।’

মৎস্য অধিদপ্তর জানায়, জেলায় বর্তমানে খাঁচায় মাছ চাষে জড়িত আছেন সহস্রাধিক মানুষ। উপকূলীয় নদী ও মোহনায় এই পদ্ধতির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রান্তিক মাছচাষিদের ভাষায়, ‘পুকুরের জায়গা নেই, জমি নেই, কিন্তু নদী তো আছে। সরকার ও এনজিও যদি পাশে থাকে, তাহলে এই পদ্ধতি দিয়ে ভোলার বেকার যুবকেরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।’
 

Link copied!